রাজশাহীর স্কুলশিক্ষার্থীরা এখনও সব বই পায়নি। বছরের এক মাস পার হলেও ১২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৬৫টি বইয়ের ঘটতি রয়েছে। কবে নাগাদ সব বই মিলবে তাও বলতে পারছেন না শিক্ষা কর্মকর্তারা। এর মধ্যে এপ্রিলেই অনেক স্কুলে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।রাজশাহী মসজিদ মিশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিহা ইলাহী এখনও পায়নি বাংলা ও গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বই। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে এখন সে বাড়িতে। ফারিহা জানায়, বই না পাওয়ায় এখনও পড়া শুরু হয়নি।
শিক্ষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহীম হোসেন জানান, স্কুলের শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণির গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং নবম শ্রেণির মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের নৈর্বাচনিক বিষয়ের বইগুলো এখনও পায়নি।
তিনি জানান, এখনও যারা বই পায়নি তাদের আগের বছরের বই সংগ্রহ করে আপাতত পড়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে অনলাইনে যে বই দেয়া হয়েছে সেগুলো থেকে সহযোগিতা নেয়ার জন্যও বলা হয়।রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির কিছু বই আসেনি। শিক্ষকরা পুরোনো বই সংগ্রহের জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিচ্ছেন।অধ্যক্ষ নুরজাহান বেগম বলেন, ‘বই না পেলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি। আমরা পুরোনো কিছু বই ব্যবস্থা করে নিতে বলেছি। অনলাইনে সেই অনুযায়ী ক্লাস হচ্ছে।’
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে সব বই পায়নি কোনো স্কুলই। সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির কিছু বই যায়নি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীসহ ৯ উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা ৩৩ লাখ ১২ হাজার ৭৭৫টি। এর মধ্যে ২২ লাখ ১০ হাজার ৫১৫টি বই পাওয়া গেছে। ঘাটতি আছে ১১ লাখ ২ হাজার ২৬০টি বই। মাধ্যমিকের ৬৭ শতাংশ বই পাওয়া গেছে।
রাজশাহীতে দাখিল পর্যায়ের ৯৬ শতাংশ এবং এবতেদায়ীর ৮৫ শতাংশ বই গেছে।
এসএসসি ভোকেশনালের ৩৭ শতাংশ বই গেছে রাজশাহীতে। জেলায় এ ক্ষেত্রে বইয়ের চাহিদা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে ৬৫ হাজার ৪৬৫টি বই পাওয়া গেছে। ১ লাখ ১২ হাজার ৭৩৫টি বইয়ের অপেক্ষায় আছে শিক্ষার্থীরা। ইংরেজি ভার্সনের বই পাওয়া গেছে ২২ শতাংশ। রাজশাহীতে এই বইয়ের চাহিদা ১১ হাজার ৫৭৫টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৫২০টি বই পাওয়া গেছে।
সবশেষ রোববারের হিসাব অনুযায়ী, রাজশাহীতে সব মিলিয়ে প্রয়োজন ৪৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৮৫টি বই। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ৬২০টি বই পাওয়া গেছে। এখন ১২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৬৫টি বইয়ের জন্য অপেক্ষায় আছে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির কিছু বই পাওয়া বাকি আছে। সপ্তম শ্রেণীর বইও কিছু কিছু উপজেলায় যায়নি। বই আসছে। সোমবার সকালেও ইংরেজি মিডিয়ামের কিছু বই এসেছে।’