বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাছ যখন মৃত্যুফাঁদ

  •    
  • ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৮:৪৯

ফেনী-সোনাগাজী সড়কের চালক ও যাত্রীরা জানান, বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ও মৃত গাছ ঝুঁকি তৈরি করছে সড়কে। ঝড়ের সময় এগুলোর ডাল ভেঙে পড়ে রাস্তার ওপর। এগুলো সরানোর দিকে মনোযোগ নেই কর্তৃপক্ষের।

ফেনী-সোনাগাজী সড়কের বেশির ভাগ গাছ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ গাছ বয়সের ভারে হেলে পড়েছে সড়কের ওপর। অনেক গাছ মরে শুকিয়ে গেছে।

সড়ক বিভাগ বলছে, এ সড়কে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে এ রকম ৭০টি গাছ। তারা অপসারণের উদ্যোগ নিচ্ছেন।

সরকারি সংস্থাগুলোর কোনো জরিপ না থাকলেও স্থানীয়রা মনে করছেন, অনেক দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে এসব গাছ।

চালক ও যাত্রীরা জানান, ঝড়ের সময় এগুলোর ডাল ভেঙে পড়ে রাস্তার ওপর। দ্রুতগামী যানবাহনের জন্য তা মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।

ঝড়ের সময় গাছের ডাল রাস্তার ওপর ভেঙে পড়ে, যা দ্রুতগামী যানবাহনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির। ছবি: নিউজবাংলা

এ রকমই এক দুর্ঘটনায় পড়ে নিহত হয়েছেন ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নুরুল আলম হেলাল। গত ১৭ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে বাসায় ফেরার পথে ফেনী-সোনাগাজী সড়কের বটতলায় একটি গাছ পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। গাছটির শিকড় পোকায় খেয়ে ফেলছে অনেক আগে।

সড়ক-জনপথ ও সামাজিক বন বিভাগ জানায়, এ সড়কের দুই পাশে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ফেনী সদর উপজেলার অধীন সড়ক বিভাগের। বাকি ১০ কিলোমিটার সোনাগাজী উপজেলার বন বিভাগের।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. হায়দার বলেন, ‘আমরা সড়ক বিভাগের লোকদের অনেক আগে বলেছি এ গাছ কাটতে। তারা কাটেনি। তাদের কারণে আজ একটা জীবন চলে গেছে। যেখানে হেলাল মারা গেছেন, তার ১০০ গজের মধ্যে আরও দুটি গাছ যে কোনো মুহূর্তে মানুষের গায়ে পড়বে। একই জায়গায় আট বছর আগে বেলাল হোসেন নামের আরেকজনের মৃত্যু হয়।’

আবুল কালাম নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘মোল্লার তাকিয়া এলাকায় আমার বাড়ির সামনে একটি গাছ মরে গেছে অনেক আগে। শিকড় ক্ষয়ে গেছে। এটিও পড়ে যাবে। এটি পড়লে পুরো সড়ক বন্ধ হয়ে যাবে। আর মানুষ থাকলে নিশ্চিত মারা যাবে। আমাদের দেখার কেউ নেই।’

ফেনী-সোনাগাজী সড়কে গাছ পড়ার ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কম না। ছবি: নিউজবাংলা

ফেনী সরকারি কলেজের মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র জামশেদ আলম বলেন, ‘গাছ এখন এই অঞ্চলের মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম। এই পথ দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে।’

মো. ইস্রাফিল নামের এক অটোরিকশাচালক বলেন, ‘মানুষ মরে গেল তার দেহ মাটি খেয়ে ফেলে। ফেনী-সোনাগাজী সড়কের রাস্তার পাশে অনেক গাছ মরে গেছে অনেক আগে। সেগুলো মাটিতে খেয়ে ফেলছে। এগুলো সরানোর দিকে কারো মনোযোগ নেই।’

ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার আহম্মদ মুনশী মনে করেন, শুধু মরা গাছ না কাটার কারণে হেলাল নামের এক ব্যবসায়ীর অকালে জীবন চলে গেছে।

মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল বলেন, ‘সড়ক ও বন বিভাগ গাছ না কাটলে আমাদের অনুমতি দিলে আমরা কেটে ফেলব।’

ফেনীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, ‘ইতিমধ্যে গাছ কাটা শুরু হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সব গাছ অপসারণ করা হবে। গাছ পড়ে একজন মারা গেছে শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। দেখেছি গাছের গোড়া পোকায় খেয়ে ফেলছে। সড়কের পাশ থেকে আমরা সব গাছ কেটে ফেলব।’

সামাজিক বন বিভাগের সোনাগাজী শাখার কর্মকর্তা বাবুল ভৌমিক বলেন, ‘আমরা এ ধরনের অভিযোগ পেলে সড়কের পাশের সব গাছ কেটে নেব। আগে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর