বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করহার ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।
রোববার রাজধানীর মতিঝিলে সংগঠনটির নিজস্ব মিলনায়তনে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এ প্রস্তাব দেন। এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক এবং সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে ডিসিসিআই প্রধান জানান, দেশে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ডিজিপির ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সময়ে এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) ছিল ২ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির চাহিদা বিবেচনায় এটা এখনও খুব কম। সামনে আমাদের উন্নয়নশীলের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো গেলেই উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে।’
বিদ্যমান করপোরেট কর কাঠামোর সংষ্কার, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করার বিকল্প কিছু নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘বিদ্যমান করপোরেট কর কাঠামোর সংস্কার ছাড়া বিনিয়োগ বাড়বে না। আবার একবারেই বিরাট সংস্কার আশা করারও দুরূহ। তাই পর্যায়ক্রমে করপোরেট করহার সহনীয় করার মাধ্যমে আশপাশের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে হবে।’
তিনি আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে এই কর বিদ্যমান হার থেকে ৫ শতাংশ এবং পরের পরের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) আরও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কমানোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১০টি বিষয়বস্তুর উপর গুরুত্বারোপ করে। এগুলো হলো সিএমএসএমই, বেসরকারি বিনিয়োগ ও এফডিআই, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, সমুদ্র অর্থনীতি, দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল এনগেইজমেন্ট, কর ব্যবস্থাপনা এবং এলডিসি উত্তরণ।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি করোনা পরিস্থিতিতে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঘুরে দাঁড়াতে আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তি আরও সহজ করার পরামর্শ রাখেন।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে মানবম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে জোর দিয়ে বলেন, ‘এ লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে আরো বেশি হারে বিনিয়োগ করা উচিত।’
সম্ভাবনাময় সমুদ্র অর্থনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জিডিপিতে এ খাতে অবদান বর্তমানে ৩ দশমিক ১ ভাগ। এ সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে দরকার একটি কার্যকর রূপকল্প তৈরি।’
রিজওয়ান রাহমান বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বেশ প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পাশাপাশি পিটিএ এবং এফটিএ চুক্তির উপর গুরুত্বারোপ করেন। দাবি করেন, এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনদের দরকষাকষির দক্ষতা আরও বাড়ানোর বিকল্প নেই।
ক্রস-বর্ডার বাণিজ্য সম্প্রসারণেও তিনি জোর দেন নীতি সহায়তার উপর।
অটোমেশনে জোর দিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, একমাত্র অটোমেশনই পারে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য খাতে সব ধরনের দুনীতি রোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে।