করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এরই মধ্যে ৯ কোটি ৮৯ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া সম্ভব হয়েছে। ১০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছানো এখন সময়ের ব্যাপার।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববারই এই মাইলফলকে পৌঁছার বিষয়ে আশাবাদী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দুপুরে এক ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসে এই আশার কথা বলেন সংস্থাটির মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে ৬ কোটি ৪৬ লাখের বেশি। আমরা আশাবাদী আজকেই প্রথম ডোজ টিকাদানের ১০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪১ লাখ শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ২৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে।কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ১ কোটি ৮১ লাখ ৮৪ হাজার টিকা দেয়া হয়েছে। এসব ক্লিনিকে ১ কোটি ৪ লাখের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম প্রয়োগ হয় ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি। রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে প্রয়োগের মাধ্যমে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও গণটিকা শুরু হয় ১০ দিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি।
টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে শুরুতে মানুষের মধ্যে আগ্রহের ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি চলছিল নানা অপপ্রচার। এই টিকা নিলে মানুষ মারা যাবে, নানা শারীরিক ক্ষতি হবে- এমন কথা ছড়িয়ে মানুষকে অনাগ্রহী করতে সংঘবদ্ধ প্রচারও চলছিল।
বাংলাদেশ টিকা কর্মসূচি শুরু করেছিল অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভ্যাক্স প্রয়োগের মাধ্যমে। এই টিকা কিনতে চু্ক্তি হয়েছিল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে।
সে সময় ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনতে চুক্তি হলেও ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় মার্চের পর কয়েক মাস এই টিকা পাঠাতে পারেনি সিরাম।
পরে বাংলাদেশ টিকার জন্য চুক্তি করে চীনের সঙ্গে। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে তোলা আন্তর্জাতিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে কোটি কোটি টিকা আসতে থাকে। এই অবস্থায় টিকার অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার পর প্রয়োগের ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে কত মানুষকে তা দেয়া হবে।
এরই মধ্যে দেশে ২৪ কোটি টিকা এসে পৌঁছেছে। সরকারের হাতে এখনও পাঁচ কোটি টিকা মজুত রয়েছে।
টিকার ব্যাপক মজুত থাকায় দেশে তৃতীয় টিকা বা বুস্টার ডোজের প্রয়োগও শুরু হয়েছে। আর ধারণা করা হচ্ছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু আগের চেয়ে কম হওয়ার পেছনে টিকার ভূমিকা রয়েছে।
তবে এখনও অনেক মানুষ টিকার বাইরে রয়ে গেছে। মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেছেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে টিকার নিবন্ধন ও টিকা নিতে সহযোগিতা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘শনাক্তের সংখ্যার তুলনায় মৃত্যু এখনও অনেক বেশি। যে কারণে আমাদের স্বাস্থ্যবিধির ওপর জোর দিতে হবে। সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়লেও এখনও হাসপাতালে যে সেবা আছে তার ওপরে এখন চাপ পড়েনি। ঢাকায় সাড়ে চার হাজারের বেশি শয্যার মধ্যে এক হাজার শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছে বলেও জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।
করোনা প্রতিরোধে দেশে বিভিন্ন কোম্পানির অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ বিক্রি হচ্ছে। তবে এই ড্রাগ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই বলেও সতর্ক করেন তিনি।