সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে কাদের নাম প্রস্তাব করবে, সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যে দুজন সদস্যের নাম প্রস্তাব করেছেন, তাদের বিষয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তবে বর্তমান সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে কাদের নাম প্রস্তাব করবে, সেটি দেখার অপেক্ষায় সমগ্র জাতি।’
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এমন মন্তব্য করেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনে আমরা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী একটি আইন তৈরির প্রস্তাব করেছিলাম। তবে আমরা যেমন আইন চেয়েছিলাম, পাস হওয়া আইনটি তেমন হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনটি নতুন মোড়কে পুরোনো জিনিস।’
জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা চাই গঠিত সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করবে, যারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন।’
শনিবার নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতির পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে, যা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
এই কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর ধারা অনুযায়ী সিইসি ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগে আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করবে।
সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্যসম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করার পর গত ৩০ জানুয়ারি সিইসি ও অন্য কমিশনার নিয়োগ বিলের গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এ গেজেট উন্মুক্ত করার মধ্য দিয়ে বিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত হয়।
এর আগে ইসি নিয়োগ বিল সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিলটি আনা হয়।
সংসদ সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হলে তা যায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য। ২৯ জানুয়ারি তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি।
এর আগে ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সিইসিসহ কমিশনারদের নিয়োগ আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি সংসদে পাস হওয়া কোনো বিলে সম্মতি দিলে তা আইনে পরিণত হয়।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সরগরম হয় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন।