বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান মারা গেছেন।
রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শনিবার বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে উপস্থিত বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম রনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমান। পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসারমুক্ত হন পীর হাবিব। গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর পরামর্শে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন।
করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে পীর হাবিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ল্যাবএইড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান স্ট্রোক করে আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি ডা. সুভাষ কান্তি দের আন্ডারে ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক পীর হাবিব আইসিইউতে ছিলেন। এর আগে দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় আমাদের এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। মাঝখানে ভারতেও চিকিৎসা নিয়েছেন।’
মেহের-এ-খোদা বলেন, ‘শুক্রবার যখন তিনি আমাদের এখানে ভর্তি হন, আমরা তাকে টেস্ট করে দেখলাম কোভিড পজেটিভ। এর পরপরই আমরা তাকে কোভিড আইসিইউতে স্থানান্তর করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৩টা ৫৮ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’
পীর হাবিবুর রহমানের ভাই সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জানান, হাসপাতাল থেকে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ তার উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোড়ের বাসায় নেয়া হবে। বাদ এশা উত্তরা ৪ সেক্টরের পার্ক মসজিদে প্রথম জানাজা হবে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে পীর হাবিবের মরদেহ। বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে হবে দ্বিতীয় জানাজা। এরপর নেয়া হবে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেলা ৩টায় তার কর্মস্থল বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেয়া হবে।
সোমবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে পীর হাবিবের মরদেহ। এ দিন বাদ জোহর সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং নিজ গ্রাম মাইজবাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
সুনামগঞ্জ শহরে ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন পীর হাবিবুর রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।