লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুজন নেতার নিজেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভেদ।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন লিটনের পাশাপাশি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদিন কাজলকেও তাদের অনুসারীরা ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ দাবি করছেন।
দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করে উসকানিমূলক পোস্টও দিচ্ছেন।
চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতির ছেলে যুবলীগ নেতা আইনুল আহমেদ তানভীরকে। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ায় গত ১৬ ডিসেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করা হয় চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিনকে। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে তিনিই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, প্রথমে নির্বাচন, এখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদ নিয়ে দলে যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে, তার দ্রুত সমাধান না হলে দলে শৃঙ্খলা থাকবে না।
যোগাযোগ করা হলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই কমিটির সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন কাজলকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ছাবির আহমেদ।
ছাবির আহমেদ নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, ‘গত শনিবার রাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির নেতারা সভা করে জয়নাল আবেদিনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেন।
ছাবির বলেন, ‘এটি দলের নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। সেখানে আমি ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিনসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এটি নিয়ে বিতর্ক করার কোনো যুক্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘আবুল কাশেমকে কেউ কমিটি ঘোষণা দেয়ার দায়িত্ব দেয়নি। নিজ থেকে তিনি গিয়াস উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করলে এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’
জয়নাল আবেদিনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করার রাতেই গিয়াস উদ্দিন লিটনকে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন আবুল কাশেম চৌধুরী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গিয়াসউদ্দিন যেহেতু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি, তাই সভাপতিকে বহিষ্কার করার কারণে নিয়ম অনুযায়ী তিনিই ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এটি যারা মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জয়নাল আবেদিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সভা ডেকে ও আলাপ-আলোচনা করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেন, ‘সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে আমারই ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করার কথা। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’