বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মৌ খামারে উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

  •    
  • ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:১৭

নাহিদ জানান, টিউশনের জমানো ৭ হাজার টাকায় কেনেন প্রথম দুটি মৌমাছির বাক্স। যাত্রা কম দিয়ে শুরু হলেও এখন তার রয়েছে ১০টিরও বেশি মৌ বাক্স। প্রতি মৌসুমে প্রতিটি বাক্স থেকে ৮-১০ হাজার টাকার মধু পান তিনি।

এক বছরেই খামার করে মধু উৎপাদনের প্রসার ঘটেছে ৫ গুণ। উৎপাদিত মধু কিনতে প্রতিদিনই ক্রেতাদের ভিড় হয় তার বাড়িতে। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমে সে মধু কিনতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। বলছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফয়সালের কথা।

ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্তবর্তী হরিপুর উপজেলার গেদুরা ইউনিয়নের বকুড়াল গ্রামের তার বাড়ি। পড়ালেখা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, অনার্স প্রথম বর্ষে। পড়াশোনার পাশাপাশি মৌ খামার করে হয়েছেন নতুন উদ্যোক্তা।

নাহিদ নিউজবাংলাকে জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর নিজ গ্রামে গত বছর লকডাউনে মৌমাছি চাষ শুরু করেন তিনি। এর আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মৌ খামারের উপর। রপ্ত করা প্রশিক্ষণ কাজে লাগান মৌমাছি দিয়ে মধু আহরণের জন্য।

টিউশনের জমানো ৭ হাজার টাকায় কেনেন দুটি মৌমাছির বাক্স। যাত্রা কম দিয়ে শুরু হলেও এখন তার রয়েছে ১০টিরও বেশি মৌ বাক্স। প্রতি মৌসুমে প্রতিটি বাক্স থেকে ৮-১০ হাজার টাকার মধু পান তিনি। ক্রেতারা তার উৎপাদিত মধু কিনছেন প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে।

গ্রামের সরিষা ক্ষেত, লিচুর মুকুল, কুমড়ো ক্ষেত থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করেন নাহিদ।

মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাহিদ বলেন, ‘মৌবাক্স ফসলের মাঠে রেখে দেই। দিনের বেলা মৌমাছিগুলো ফুল থেকে নেকটার (ফুলের রস) সংগ্রহ করে। প্রসেসিং এর মাধ্যমে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তা মধুতে পরিণত করে। নেকটার সংগ্রহের সময় তাতে পানির পরিমাণ থাকে ৫০-৬০ ভাগ। পরবর্তীতে সেটা সম্পূর্ণ হাতের স্পর্শ ছাড়া মধু সংগ্রহের মেশিন দিয়ে সংগ্রহ করতে হয়। মেশিনে সংগ্রহের ফলে মৌচাক কিংবা বাচ্চা কিছুই নষ্ট হয় না।’

তিনি নিউজবাংলাকে আরও বলেন, ‘আমি পড়াশোনার পাশাপাশি মৌ খামার শুরু করেছি। শুরুটা শখের বশে হলেও এতে আশা করছি আমি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারবো। দিনে দিনে আমার স্বপ্নের প্রসার ঘটছে। এখন আমার লেখাপড়ার খরচের পাশাপাশি পরিবারকেও অর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারছি। ভবিষ্যতে আমি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই যার শুরুটা মূলত এখান থেকেই করেছি৷ আমি প্রত্যাশা করি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ও সহযোগিতা পেলে আমার স্বপ্ন দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হবে।’

মধু ক্রেতা ডা. আনসারুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে খুব একটা খাঁটি মধু মিলে না। নাহিদের কাছে খুব সহজেই খাঁটি মধু পাই। আমি নিয়মিত তার খামার থেকে মধু কিনছি।’

স্থানীয় আলম বলেন, ‘নাহিদের মৌ খামারটি বেশ আলোচিত উপজেলায়। লেখাপড়ার পাশাপাশি তার এই মৌ খামার তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী।’

হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নইমুল হুদা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৌ খামার একটি দারুণ উদ্যোগ। এতে পরাগায়ন ঘটে এবং ফসলের ফলন ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ভালো ফলনের জন্য আমরা কৃষককে ফসলের মাঠে দুটি করে মৌ বাক্স রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

এ বিভাগের আরো খবর