রাজশাহীর বাঘায় এক যুবককে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায়ে খালাস পেয়েছেন ১৫ জন।
রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এন্তাজুল হক বাবু নিউজবাংলাকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সুলতানপুরের মিন্টু আলী, মো. রানা, মো. পানা, আরিফ হোসেন ও শরিফ হোসেন এবং নাটোর লালপুর উপজেলার মনিহারপুরের আরজেদ আলী ওরফে ভোলা।
বিচারক তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার বরাতে পিপি এন্তাজুল জানান, একই এলাকার নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এক কিশোর। ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি সে তার বন্ধুদের নিয়ে ওই ছাত্রীর পথ আটকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়।
ভুক্তভোগী বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে বিষয়টি জানান। তখন ছাত্রীর নানা ওই কিশোরের বাবা-মায়ের কাছে বিচার দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুমন।
সেদিন বিকেলে বাঘা উপজেলার সুলতানপুর মোড়ে ওই মেয়েটির মামা নাজমুল হোসেন ও মামাতো ভাই তারিকুল ইসলাম তুষারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে ওই কিশোর ও তার সঙ্গীরা। নাজমুলকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আজিজুল বাঘা থানায় হত্যা মামলা করেন।
তিনি বলেন, ‘মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন ২৩ জন। পুলিশ তদন্ত করে আরও ২ জনকে শনাক্ত করে। পরে ২৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রধান আসামিসহ ৪ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক। শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে। অন্য ২৩ জনের বিচার শেষ হলো রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।’
‘রায় ঘোষণার সময় ২৩ জন আসামিই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত ৬ জনকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ। নিউজবাংলাকে নিহত নাজমুলের চাচা আবু তালেব বলেন, ‘প্রকাশ্যে নাজমুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে আসামিরা। কিন্তু রায়ে অনেকেই বেকসুর খালাস পেয়েছে।’
তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।