বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আশা জাগানিয়া লাল-সবুজের বলসুন্দরী

  •    
  • ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৯:২৭

কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, কুমিল্লা ও আশপাশের জেলাতেও এত বড় বরই বাগান একটিও নেই। বেলে ও দোআঁশ মাটিতে বরই চাষ ভালো হয় বলেও জানান তিনি।

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রাম। সেই গ্রামের উদ্যোক্তা ইউনুস ভূইয়া। ৬০ বিঘা জমিতে তিনি চাষ করেছেন বলসুন্দরী বরই। ফলন ভালো হওয়ায় বলসুন্দরীর ভারে নুইয়ে পড়েছে বাগানের গাছগুলো।

শীতের স্নিগ্ধ সকালের কুয়াশায় সূর্যের মিষ্টি রোদ বলসুন্দরীর গায়ে লেগে যেন জ্বলজ্বল করছে। লাল-সবুজ রঙের অস্ট্রেলিয়ান জাতের এ বরই খেতেও মজা, বাজারে চাহিদাও বেশ।

এত বড় বাগানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখিরা দলবেঁধে নামে বলসুন্দরী খেতে। ফল আর পাখিদের মিলনমেলায় প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে কাজিয়াতলায়।

উদ্যোক্তা ইউনুস জানান, ১৪ বছর সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে কৃষিতে মনোযোগী হওয়ার চিন্তা করেন। এ লক্ষ্যে নিজের অল্প কিছু জমির সঙ্গে অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৬০ বিঘাতে গড়ে তোলেন ফলের বাগান।

ইউটিউব দেখে নাটোর থেকে আনেন বলসুন্দরী বরই। পাশাপাশি লেবু, পেঁপে ও কলাগাছের চারা রোপণ করেন। গত বছর ফলন অল্প হলেও এ বছর বাগানজুড়ে শোভা পাচ্ছে বলসুন্দরী। গাছের ডাল মাটিতে নুইয়ে পড়েছে ফলের ভারে।

তিনি আরও জানান, এক মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে ২২ মণ বরই উত্তোলন করেন বাগান থেকে। প্রতি কেজি খুচরা ১০০ টাকা ও পাইকারি ৮০ টাকায় বিক্রি করেন সেগুলো।

বাগানে প্রায় ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। মৌসুম শেষে পুঁজি ছাড়াই অন্তত ৫০ লাখ টাকা মুনাফা হবে বলে মনে করেন এ উদ্যোক্তা।

বলসুন্দরী খেতেও মজা, বাজারে এর চাহিদাও বেশ। ছবি: নিউজবাংলা

ইউনুস ভূইয়ার বাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছ থেকে বরই তুলতে ব্যস্ত বাগানের কৃষকরা। অন্তত কুড়িজন কৃষক বাগানে কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ আবার তোলা বরই মেপে মেপে প্যাকেটজাত করে প্লাস্টিকের বাক্সে ভরছেন।

দেখা যায়, বাগানের মধ্যে ছোট একটি পুকুর। তার পাড়ে চাষ করা হয়েছে বীচিবিহীন জাতের লেবুর গাছ। রয়েছে দেশীয় বিভিন্ন জাতের কলা। তবে বাগানের সিংহভাগই বলসুন্দরীদের দখলে। একবার পুরো বাগানটি ঘুরে আসতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে। জানা যায়, এ বাগানের বলসুন্দরী স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হচ্ছে।

কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ইউনুস ভূইয়ার বলসুন্দরী দেখতে সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু৷ তাই ক্রেতাদের কাছে আলাদা চাহিদা রয়েছে এ বরইয়ের।

তবে ইউনুস ভূইয়া জানান, সহজশর্তে ঋণের সুবিধা পেলে তিনি বাগানটিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারতেন।

মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ইউনুস ভূইয়াকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। উৎপাদনে জৈব পদ্ধতি প্রয়োগ করায় তার বাগানের সতেজ বরইগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। বরই চাষে ইউনুস যেন আরও দক্ষ হতে পারেন, সে জন্য তাকে প্রশিক্ষণও দিয়েছি।’

কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, কুমিল্লা ও আশপাশের জেলায় এত বড় বরই বাগান আর একটিও নেই। বেলে ও দোআঁশ মাটিতে বরই চাষ ভালো হয় বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর