রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ২০ তলা অ্যাকাডেমিক ভবনের নাম হবে ট্রাকচাপায় নিহত ছাত্র মাহমুদ হাবিব হিমেলের নামে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার এ কথা জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি বুধবার বিকেলে এই ঘোষণা দিয়েছেন।
কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে এই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর পাশে মঙ্গলবার রাতে নির্মাণসামগ্রীবাহী ট্রাকের চাপায় হিমেল নিহত হন।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকা পাঁচ ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে রাজশাহী-ঢাকা সড়ক অবরোধ করেন। পরে তারা দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান নেন।
পরিস্থিতি সামলাতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। বিক্ষোভের মুখে রাতেই ক্যাম্পাস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর রাত ২টার দিকে বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে প্রক্টরকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন উপাচার্য।
উপাচার্যের বক্তব্যের পর হিমেলের সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা কয়েক দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো- হিমেলের পরিবারকে ন্যূনতম ৫ কোটি টাকা দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফটকের সামনে তিনটি পদচারী সেতু নির্মাণ, দুর্ঘটনায় আহত দুজনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন, ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, দুর্ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা।
উপাচার্য বুধবার শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করেছে। ট্রাকচালক গ্রেপ্তার হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাস্তায় লাইটের কাজ শুরু হয়েছে।
‘এ ছাড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে, ভারী যানবাহন চলাচলের সময় রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা করা হবে। পুলিশ ও তার (হিমেলের) পরিবারের পক্ষ থেকেও মামলা করা হবে। চারুকলা অনুষদে যাওয়ার রাস্তার কাজ শুরুর জন্য প্রকৌশলীকে বলেছি, তবে এ জন্য একটু সময় লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হিমেলের মায়ের যাবতীয় আর্থিক প্রয়োজনের দায়িত্ব নেয়া হয়েছে। আপাতত তার মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে একটি অ্যামাউন্ট আনার চেষ্টা করব। যেন একটি এফডিআর করা হলে হিমেলের মা প্রতি মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা পান।’
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী এতে অংশ নেন।