নিজ ক্যাম্পাসে ট্রাকচাপায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র মাহমুদ হাবিব হিমেলকে দাফন করা হয়েছে তার নানাবাড়িতে।
নাটোরের গাড়িখানা গোরস্তানে বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার মরদেহ দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নাটোর শহরের কাপুড়িয়াপট্টি নানাবাড়ি এলাকায় পৌঁছায়।
মরদেহের সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
মরদেহ প্রথমে নেয়া হয় স্থানীয় একটি স্কুল প্রাঙ্গণে। এ সময় এলাকাবাসী, স্বজন ও সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, পৌর মেয়র উমা চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাদিম সারওয়ারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন।
২০১৭ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর নাটোরেই স্কুল, কলেজ শেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন হিমেল। সেখানে চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়ছিলেন তিনি।
পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, ‘মেধাবী ছেলেটির এভাবে মারা যাওয়া কেউ মানতে পারছে না। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। হিমেল রক্তদান সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার জানান, হিমেলের মা মনিরা আক্তারের হাতে ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেয়া হয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণসহ নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার কথাও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হিমেলের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনকে শহীদ হিমেল বিজ্ঞান ভবন নামে নামকরণের দাবি জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি পূরণ না করলে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলন শুরুর হুমকি দেন।
হিমেলের নানা মনির আহম্মেদ জানান, হিমেলের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তার মাও অসুস্থ। তার মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয় পাথরবাহী ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হিমেল। বাইকে থাকা অন্য দুজন আহত হন।