সেই প্রবাসী বাংলাদেশি তাহলে কে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নয়, সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশি- ফখরুলের এমন দাবির পরদিন বুধবার ব্রিফিংয়ে এসে প্রতিপক্ষের প্রতি এমন প্রশ্ন ছুড়লেন সড়কমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগে প্রথম দিকে পুরোপুরি অস্বীকার করলেও এখন স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে। এখন বলছে প্রবাসী একজন বাংলাদেশি এ কাজ করছেন।
‘কিন্তু এই প্রবাসী বাংলাদেশি কে? তার পরিচয় কেন প্রকাশ করেননি? বিএনপি নেতারা বলেছেন, এ ধরনের কার্যক্রমে তাদের নৈতিক সমর্থন আছে এবং তারা এতে সংহতি প্রকাশ করেন। এ থেকে সবকিছু স্পষ্ট হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে কথার লড়াই চলছে কিছু দিন ধরে। সরকারের অভিযোগ, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সহায়তা বন্ধ করতে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে।
বিএনপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। এখন জনগণের করের টাকায় সরকারের অপকর্ম ঢাকতে আবার লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, লবিস্ট দল হিসেবে বিএনপি নয়, এক প্রবাসী বাংলাদেশি নিয়োগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।’
অবশ্য সেই প্রবাসীর প্রতি সমর্থন আছে বলেও জানান ফখরুল।
জবাবে কাদের বলেন, ‘জনগণ এসব কৌশলী জবাব এবং কথামালার চাতুরিতে বিভ্রান্ত হয় না। জনগণ জানে বিএনপির আসল চরিত্র।’
বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের মির্জা ফখরুলের চিঠি দেয়ার প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, ‘তাদের ভাষায় নাকি মানবাধিকার আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চিঠি লিখেছেন। যাক, অন্তত চিঠি লেখার কথা তো স্বীকার করেছেন।
‘তারা কথায় কথায় সার্বভৌমত্বের কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন। বিদেশিদের কাছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে?
‘বিএনপি নতজানু, ভঙ্গুর এবং পরনির্ভর একটি রাজনৈতিক দল। তারা জনগণের কাছে যায় না, যায় বিদেশিদের কাছে, যায় বিদেশি দূতাবাসের কাছে। তাদের বুঝতে হবে বিদেশিরা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। ক্ষমতায় বসানোর মালিক এ দেশের জনগণ।
‘এটি বিএনপির মতো মেরুদণ্ডহীন এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্কহীন রাজনৈতিক দলের পক্ষেই সম্ভব।’
‘জয়কে অপহরণ করতে চেয়েছে বিএনপি’
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণে বিএনপি ষড়যন্ত্র করেছিল বলেও অভিযোগ করেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সন্তান ও জাতির পিতার দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ফিজিক্যালি হার্ম করার পরিকল্পনা প্রমাণিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিএনপি কর্মী রিজভী আহমেদ সিজারের বিরুদ্ধে।
‘মামলা চলাকালীন রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে জানান, তিনি ও তার সহযোগী ইয়োহানেস থেলার মিলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করার উদ্দেশে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একজন এফবিআই স্পেশাল এজেন্টকে ঘুষ দেন।’
কাদের বলেন, ‘রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে আরও জানান, এই কাজের জন্য বিএনপির হাই কমান্ড হতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নথিতে যা লিপিবদ্ধ আছে। এই বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।’