বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরতে যাচ্ছেন- এমন তথ্যে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি যে তার (খালেদার) স্বাস্থ্য নিয়ে অপরাজনীতি করেছে, বেগম জিয়ার সুস্থতার মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে।’
বিএনপি নেত্রী হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে যাচ্ছেন- এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া জানান হাছান।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তার।
সে সময় বিএনপি নেত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের নেত্রীকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে আবেদন করা হয়। বিএনপিও এই দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, তাদের নেত্রীর জীবন সংকটাপন্ন। তার চিকিৎসকরা দাবি করেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে এবং এর চিকিৎসা দেশে নেই। দ্রুত বিদেশে পাঠানো না গেলে তার কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপি নেত্রীকে দেখে এসে বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার বিদেশে না পাঠালে কিছু একটা হয়ে যাবে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই।
তথ্যমন্ত্রী বিএনপির সেই বক্তব্যগুলোই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে তারা। ডাক্তারদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে। বলেছে, বেগম জিয়াকে যদি বিদেশে নেয়া না হয় তাহলে তার যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে তারা যে অপরাজনীতি করেছে এটিই আজকে প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বেও তারা (বিএনপি) একই কাজ করেছিল। আগেও যখন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখনও একই কথা বলেছিলেন। বিদেশ না নিলে তাকে বাঁচানো সম্ভব না, এবারও একই কথা বলেছিল। এই বিএনপি মিথ্যাচার করে, এটিই প্রমাণিত হলো বেগম জিয়ার সুস্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে।’
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া ২০২০ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। সরকার প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দণ্ড স্থগিত করেন দুটি শর্তে। এর মধ্যে একটি ছিল তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
তবে খালেদা জিয়া গত এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার স্বজনরা এক দফা দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার আবেদন করেন। সেটি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এবার বিএনপি দাবিটি নিয়ে রাজপথে নামে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেত্রীকে ৫ বছরের সাজা দেয়ার পর যখন তাকে কারাগারে নেয়া হয়, সে সময়ও তার চিকিৎসকরা তাকে নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন।
দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক দাবি করেন, কারাগারে থাকলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। আরেক চিকিৎসক দাবি করেন, তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।