আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দিয়েছে। দুই পক্ষে বিরোধ মেটাতে দুই দিন ধরে বৈঠক করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এসব বৈঠেকে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত এসেছে।
রোববার বৈঠকের পর শ্রমিক লীগের দুই নেতা বিবৃতি জানিয়েছিল ‘ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন। তবে সোমবার আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসেন শ্রমিক লীগ নেতারা।
২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলনে ফজলুল হক মণ্টুকে সভাপতি এবং কে এম আযম খসরুকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। মন্টু মারা গেলে সভাপতির পদটি শূন্য হওয়ায় কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নূর কুতুব আলম মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর।
সংগঠনে নেতাদের বিভক্তির বিষয়টি প্রকাশ পায় গত ২২ জানুয়ারি। সেদিন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাদের একটি অংশ বৈঠক করেন। সেখানে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন না, তাকে জানানোও হয়নি। বৈঠকে সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে এই দায়িত্ব দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই খবর সংগঠনের বিভিন্ন নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও দেন।
না জানিয়ে বৈঠক করা এবং তাকে সরিয়ে অন্য একজনকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শুনে আযম খসরু এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান, দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান সিরাজুল ইসলাম ও বি এম জাফর এবং দপ্তর সম্পাদক ফজলুল হককে বহিষ্কারের কথা জানান।
এমন পরিস্থিতিতে রোববার শীর্ষ দুই নেতাকে নিয়ে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ।
পরদিন আবার বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তরসম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
বৈঠকের বিষয় কী ছিল- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেটা তো প্রেস রিলিজ দিয়েছি।’
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘কালকে বসেছিলাম, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককের সঙ্গে আর আজকে অন্যদের সঙ্গে বড় কলেবরে বসলাম। তাদের সকলের কথা শুনলাম। পরে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চূড়ান্ত করা হলো। যেটা আগামী ২ আড়াই বছরে হয়নি।‘
শ্রমিক লীগের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী দিনে জাতীয় শ্রমিক লীগকে আরও শক্তিশালী ও সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা হয়। জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দ বিগত দিনের কথা ভুলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং দেশব্যাপী জাতীয় শ্রমিক লীগকে মেহনতি-শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আস্থার সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলবেন।