কুয়াশায় মোড়ানো সকালে কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন জগলুল মিয়া। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে পারেননি। একপর্যায়ে লাইনের মধ্যেই বসে গিয়ে বললেন, ‘কোন সময় আইছি। মানুষ লড়েও না, চড়েও না। ভিতরে ভোট অয়নি কেউবো।’
ভোট গ্রহণে ধীরগতির এমন চিত্র কুমিল্লা মুরাদনগর রামচন্দ্র উত্তর ইউনিয়নের আক্কাব্বরেরনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণে এমন ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের ভোটাররা।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইভিএম পদ্ধতি নতুন হওয়ায় এ সমস্যা। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট কাস্ট করা যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রটির ৫ নম্বর বুথে ভোটার আছেন ৩৫৬ জন। প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট নেয়া হয়েছে মাত্র ৯টি। পরের এক ঘণ্টায় মোট ২৩টি।
নিউজবাংলাকে এ বুথের ভোটার জোহরা বেগম বলেন, ‘লাইনে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধইরা খারাইছি। অহনও ভোট দিতাম পারছি না।’
রামচন্দ্র পুর মধ্যপাড়া থেকে ভোট দিতে এসেছেন ৫২ বছর বয়সী মো. জামাল মিয়া। বলেন, ‘দুই ঘণ্টা হলো দাঁড়িয়ে আছি। এখনও ভোট দিতে পারিনি।’
রামচন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. মজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন,‘এ কেন্দ্রে দুই হাজার দুইজন ভোটার আছে। ছয়টি বুথ। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ৫ শতাংশ ভোট হয়েছে।
‘মুরাদনগরে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট চলছে, তাই ধীরগতি। আশা করি, ৪টা পর্যন্ত ৬০-৭০ শতাংশ ভোট সংগ্রহ করা যাবে।’
ধীরগতির কারণে নির্বাচন কেন্দ্রের মাঠে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মায়া বেগম ও তাজু বেগম। ‘কম্পিউটার নষ্ট, ভোট দেব না’ বলে কেন্দ্র ত্যাগ করেন তারা।
এ বিষয়ে ইভিএম ভ্রাম্যমাণ কারাগরি দলের মুরাদনগর উপজেলা প্রধান মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘ষষ্ঠ ধাপের দেশের সকল ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে। মুরাদনগরে কোথাও মেশিন হ্যাং হওয়ার খবর পাইনি। তবে নারী বুথে ধীরগতির অভিযোগ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’
কুমিল্লা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিকাল ৪টায় ভোট কেন্দ্রের ফটক বন্ধ হয়ে যাবে। যারা ৪টার পূর্বে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তাদের সবার ভোট গ্রহণ করা হবে।’
কুমিল্লার মুরাদনগরে ষষ্ঠ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে এবার চেয়ারম্যান পদে ১৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলছে।