বরিশাল নগরীতে চারটি অটোরিকশাকে চাপা দিয়েছে বাস। এতে ৩ জন আহত হয়েছেন; তাদের ভর্তি করা হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে শুক্রবার রাতে এই দুর্ঘটনা হয়।
আহতরা হলেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তিনটির চালক মো. রতন, মো. শাহরিয়ার ও মো. বেল্লাল।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর সাকুরা পরিবহনের বাসটি যিনি চালাচ্ছিলেন তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি একজন কিশোর। তিনি মূলত বরিশাল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসচালক। সে সময় তিনি সাকুরা পরিবহনের বাস কেন চালাচ্ছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার সময় সাকুরা পরিবহনের বাসে ছিলেন শামিম উল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাত ৯টা ১০ মিনিটে বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বাসে এক কিশোর ছেলে উঠে স্টার্ট দিলে হঠাৎ করে একটি ঝাঁকুনি লাগে। এরপরই বাসটা উল্টা-পাল্টা চলতে থাকে।
‘এতে কয়েকটি যানবাহনে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আহত হয় কয়েকজন। এরই মধ্যে বাইরে থেকে এক লোক লাফ দিয়ে বাসে উঠে ব্রেক করলে বাসটি দাঁড়ায়। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমরা যাত্রীরা সবাই দাঁড়ানো। আমরা পরিবার নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। সাকুরা পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বলা হলেও তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।’
নওরীন আক্তার নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘আমি আমার স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে ঢাকা যাব। গাড়ি হঠাৎ করে চালু হয়ে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে। সিট থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা ছিল। বাসের ড্রাইভার থাকতে কেন হেলপার গাড়ি চালাবে? গাড়িটি ঘুরপাক খাচ্ছিলো ভয়ংকরভাবে। বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত।
‘এখন আমরা প্রায় ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। অনেক নারী রয়েছেন, যাদের সঙ্গে কেউ নেই। তারা কী করবে সেই বিষয়ে সাকুরা কর্তৃপক্ষ কথা বলছে না। শ্রমিক ইউনিয়নে কথা বলেছি, তারা গাড়ি আটকে দিয়েছে।’
বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মুকছেদুল আকন জানান, তাদের অটোরিকশা চাপা দেয়া হয়েছে বলে বাসটি আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘রাতে আমাদের চারটি গাড়ি চাপা দেয়া হয়েছে। একজন চালককে আহত অবস্থায় বাসের নিচ থেকে বের করা হয়েছে। হয়ত তার পা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা গাড়ি আটকে দিয়েছি। বাস শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা গাড়ি আটকে দেয়ায় সমর্থন করেছে।’
সাকুরা পরিবহনের বরিশাল কাউন্টারের ম্যানেজার আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোনো স্টাফ গাড়ি চালায়নি। গাড়ির হেলপার বক্সে মালামাল উঠাচ্ছিল এবং ড্রাইভার সামনে দোকানে চা পান করছিল। এমন সময় বরিশাল এক্সপ্রেস নামের একটি পরিবহনের হেলপার গাড়িতে উঠে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা একটি এসি বাসের ব্যবস্থা করছি যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য।’