বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতিবন্ধীদের জন্য অনলাইন চাকরির মেলা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:২০

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এবং বিবিডিএন চেয়ারম্যান আরদাশীর কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন একটি কল্যাণমুখী ট্রাস্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৩ সালের অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রতিবন্ধীদের জন্য সুখবর দিল বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক- বিবিডিএন। প্রযুক্তির মাধ্যমে চাকরির বাজারে তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বিবিডিএন। সে লক্ষ্যে বুধবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এই মেলা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে আইএলওর স্কিলস ২১ প্রকল্প এবং এফসিডিওর অর্থায়নে ইনোভেশন টু ইনক্লুশন (আইটুআই) প্রকল্পের সহযোগিতায় এ মেলাটি হচ্ছে। কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম এবং বিডিজবস।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এবং বিবিডিএন চেয়ারম্যান আরদাশীর কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন একটি কল্যাণমুখী ট্রাস্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৩ সালের অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

লিওনার্ড চেশায়ারের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ জহির-বিন-সিদ্দীক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘এই প্রকল্পের লক্ষ্য, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। প্রতিবন্ধীদের জন্য তথ্যের ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। এই প্রকল্পের শুরুতে আমরা চিন্তা করেছি কীভাবে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা বাড়ানো যায়, বেসরকারি খাতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়।’

‘এই প্রকল্পের আওতায় বিডিজবসের সহায়তায় আইটুআই ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজার নামে প্রথমবারের মতো শুধু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি জব পোর্টালের উদ্বোধন হয়েছে। এখানে প্রতিবন্ধীরা তাদের সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।’

বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘এটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত এবং একটি মাইলফলক। করোনা মহামারির কবলে পড়ে আমাদের অর্থনৈতিক খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা যেমন সত্য, তেমনি প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি একটি আশীর্বাদ; বিশেষ করে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য। তারা ঘর থেকে কাজে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন।’

ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা যারা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন আছি, আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, তাদের দক্ষতার বিবরণ এবং অবস্থান উল্লেখ করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়, তবে অন্যান্য চেম্বার অফ কমার্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেব।’

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা- আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পৌটিআইনেন বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চলছে। প্রতিবন্ধকতা যেন তাদের কর্মক্ষম হওয়ার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সে জন্য আইএলও প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষতার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং কর্মক্ষেত্রে শোভন পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ‌্যে বাংলাদেশ সরকার, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’

এস্পায়ার টু ইনোভেট প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, ‘আমরা সবাই আজ একটা মঞ্চে একত্রিত হয়েছি। এটি আমাদের প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭-১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। যেসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন, তারা প্রমাণ করে চলেছেন যে তারা সুস্থ ব্যক্তির চেয়েও কোনো অংশে কম নয়। দরকার শুধু সুযোগ।

‘আমি ধন্যবাদ দিতে চাই মেলায় অংশগ্রহণকারী ৬০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। যারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ করে দিতে এগিয়ে এসেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ সামনে রেখে এটুআই কাজ করে যাচ্ছে।’

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘সরকার কর্তৃক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য যেসব বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় তার একটি বড় অংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে যে দর্শনটি আমরা মনে-প্রাণে লালন করি, সেটি হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই সমাজের অংশ এবং তাদের অধিকার এই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ডিজঅ্যাবিলিটি ইনক্লুশন অ্যাডভাইজরি গ্রুপ গঠন করেছে। তাদের জন্য রিফ্রেশার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে।

‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কারিগরি শিক্ষায় ৫ শতাংশ কোটা আছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য জব প্লেসমেন্ট সেলে তথ্য রাখা হয়, যেন সেখান থেকে তাদের তথ্য নিয়ে নিয়োগকর্তারা তাদের নিয়োগ দিতে পারেন। প্রতিটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন ফোকাল নিয়োগ দেয়া আছে, যারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করেন।’

এস্পায়ার টু ইনোভেটের ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (অ্যাকসেসেবিলিটি) ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক ইশতেহার, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার এবং আমরা সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছি। কেউ পিছিয়ে থাকবে না- এই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা হাতে হাত রেখে কাজ করে যাব। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো প্রতিবন্ধী ২০১৩ সালের অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কর্মের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর