বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিজেই রোগী রংপুর মেডিক্যাল

  •    
  • ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১০:০৮

প্রায় অর্ধশত বছর আগের ওয়্যারিং করা বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে চলছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম। পুরোনো এই সংযোগগুলোর জন্য এখন অহরহই ঘটছে দুর্ঘটনা। নষ্ট হতে চলেছে দামি দামি যন্ত্রপাতিও।

ধারণক্ষমতার চেয়ে ভারী যন্ত্র আর প্রয়োজনের অতিরিক্ত এসি ব্যবহার করায় লোড নিতে পারছে না রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কয়েক দশকের পুরোনো বৈদ্যুতিক তারগুলো।

এ কারণে প্রায়ই বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ ঘটছে অগ্নিসংযোগ। বিকল হয়ে পড়ে আছে বহু মূল্যবান বেশ কিছু চিকিৎসা সরঞ্জামও।

সর্বশেষ গত এক মাসে দুই দফা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে হাসপালটিতে।

কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যুতের সংযোগ সংস্কারে প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অর্থ চাইলেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাচ্ছে না হাসপাতালটি। ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৯৭৬ সালে ৫০০ শয্যার চারতলাবিশিষ্ট রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। সে সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য হাসপাতালটিতে যে ওয়্যারিং করা হয়েছিল তা দিয়েই এখনও চলছে। যদিও এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।

বেড়েছে রোগীর চাপও। এ কারণে ৫০০ থেকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে হাসপাতালটি। চারতলা থেকে হয়েছে পাঁচতলা ভবন। বর্তমানে আড়াই হাজারের বেশি রোগী সেখানে ভর্তি থাকছেন প্রতিদিন।

এসব কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বহুগুণে বৃদ্ধি পেলেও সংযোগের ওয়্যারিং আছে সেই আগের মতোই।

হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে গত তিন বছরে হাসপাতালটিতে ছোট-বড় অন্তত ১০টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গাইনি ওয়ার্ডের পেছনের একটি সংযোগ থেকে।

সর্বশেষ গত শনিবার মধ্যরাতে হাসপাতালের নিচতলায় পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে বিদ্যুতের মেইন ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ডে অগ্নিসংযোগ ঘটে।

সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে এই হাসপাতালে গণপূর্ত বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই তিন শর বেশি কক্ষে এসি চলে। এসব এসির ৯০ শতাংশই বিভিন্ন সময়ে ওষুধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের উপঢৌকন হিসেবে দিয়েছে।

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোছা: রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভারী ভারী মেশিন বসানো হয়েছে। এসব মেশিন বসাতে গণপূর্তের অনুমোদন ও তাদের মাধ্যমেই স্থাপন করতে হয়। কারণ কোথায় বিদ্যুতের কী সংযোগ রয়েছে তা শুধু গণপূর্তের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাই বলতে পারেন। অনুমোদনহীন সরঞ্জাম স্থাপনের কারণেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অগ্নিসংযোগ ঘটছে।’

পুড়ে যাওয়া বিছানা। ছবি: নিউজবাংলা

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয় ২০১৪ সালে। দুটি মেশিনই এখন অচল। এ ছাড়া আরও ৫টি সাধারণ এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বিকল।

হাসপাতালটির স্লাইস সিটি স্ক্যান, এমআরআই মেশিনসহ আরও অসংখ্য সরঞ্জামও এখন বিকল।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর এবং গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, বিদ্যুতের সংযোগ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ১ কোটি ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৩১ টাকার একটি চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো সেটি পাস হয়ে আসেনি।

এর আগের দুই অর্থবছরে সংস্কারের জন্য যে অর্থ এসেছিল তা চাহিদার চেয়ে দুই-তৃতীয়াংশই কম।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংস্কার প্রয়োজন। প্রতি বছর কিছু কিছু হয়। কিন্তু যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণপূর্ত বিভাগকে অনুরোধ করব, হাসপাতালের যে বৈদ্যুতিক সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলোর পুরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একটা রিপোর্ট দিতে। একই সঙ্গে কে কয়টি এসি ব্যবহার করছে, তারও একটি হিসাব দিতে। লোডে একটু ভারসাম্য থাকতে পারে, সেটাও তারা বের করবে। এ জন্য তাদের সঙ্গে আমি বসব।’

এ বিভাগের আরো খবর