গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জেলা প্রশাসকরা এককালীন অর্থ বরাদ্দ চাইলে তা নাকচ করে দিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার ডিসি সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা এ প্রস্তাব তুললে তা নাকচ করে দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
পরে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে যে দুর্যোগগুলো হয়েছে সে সময়ে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসকরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। করোনার সময়ে প্রায় ৭ কোটি মানুষকে মানবিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এই কঠিন কাজটি সম্ভব হয়েছে জেলা প্রশাসকদের সমন্বয়ের কারণে।
‘আলোচনার সময় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এককালীন অর্থ বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসকরা প্রস্তাব দেন। আমরা সেখানে দ্বিমত পোষণ করেছি। আমরা বলেছি দুই বা তিন কিস্তিতে দিলে কাজের গতি ঠিক থাকে। কাজের মনিটরিং ভালো হয়, কাজের ফলাফল ভালো হয়।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি উপজেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্প বাদ দিয়েছি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সুপারিশে। যেখানে দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশের নিচে সেই উপজেলাগুলো আমরা তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি। উনারা সেগুলো তালিকাভুক্ত করার অনুরোধ করেছিলেন।
‘আমরা বলেছি দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। যে উপজেলাগুলো উন্নত হবে সেগুলো থেকে আমরা ধীরে ধীরে ইজিপিপি প্রকল্প বাদ দেব। পিছিয়ে পড়া উপজেলায় আমরা বেশি করে বিনিয়োগ করব। আগে ইজিপিপিতে ২০০ টাকা বরাদ্দ ছিল, এই অর্থবছর থেকে তা ৪০০ টাকা করেছি।’
পাহাড় ধসের বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক করা যায় কি না সে ব্যাপারে প্রস্তাব এসেছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করব। যাতে পাহাড় ধসে মানুষের মৃত্যু না হয়।
‘সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে যারা নিখোঁজ হন তাদের আইনি কাঠামো তৈরি করে তাদের মৃত ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তা না হলে ওই পরিবারের লোকেরা সরকারের অনেক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়। এটা মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলেছি, মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা করে আমাদের অবশ্যই সিদ্ধান্তে আসা দরকার।’
ডিসিরা ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র এবং মুজিব কেল্লার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে একমত হয়েছি। কারণ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে দেখেছি আশ্রয় কেন্দ্রের ঘাটতি রয়েছে। প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেমের কথা বলেছেন তারা। গত ২ বছরে যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো করা হয়েছে, সেগুলোতে এই ব্যবস্থা আছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৭ হাজারের উপরে। ২০১৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ২২০টি নতুন কেন্দ্র হয়েছে। আরও এক হাজার করার জন্য আমরা পরিকল্পনা করেছি।’