বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এস এম মাহমুদ সেতু খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
হাইকোর্টের আপিল শাখায় বুধবার সেতুর পক্ষে তার আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল আবেদন করেন।
জামিউল হক ফয়সাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ মামলার এজাহারে সেতুর নাম ছিল না। পরে তার নাম যুক্ত করা হয়। তা ছাড়া কোনো সাক্ষীও তার নাম বলেনি, তার পরও তার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে ১০টি যুক্তি দিয়ে ১ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার আপিল করেছি। আশা করি হাইকোর্টে আমরা খালাস পাব।’
বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার হত্যা মামলায় ৮ ডিসেম্বর ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এরপর ৬ জানুয়ারি এ রায়ের ডেথ রেফারেন্স এবং মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে আসে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার ওরফে অপু, মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান ওরফে মাজেদ, মুজাহিদুর রহমান ওরফে মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, সাদাত ওরফে এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ ওরফে মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম, মাহমুদুল জিসান ও মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা।
আবরারকে যে রাতে হত্যা করা হয়, তার পরদিন ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তার বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে।
তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মোট ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ১৮ নভেম্বর পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাদের মধ্যে একজন পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে মামলাটি পরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ বদলির আদেশ দেয়া হয়। বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলাটির বিচারকাজ শুরু করেন।
দুই পক্ষে যুক্তিতর্ক ও শুনানি শেষে গত ১৪ নভেম্বর বিচারক এ মামলার রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ রাখেন। তবে ওই দিন রায় লেখা বাকি থাকায় তারিখ পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর ঠিক করা হয়।