বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লঞ্চে আগুন: জামিন মেলেনি আসামিদের

  •    
  • ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৩৫

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন আসামিদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় তারা নৌযানে বা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তারা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী নয়। এটা অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা।’

নৌ-আদালতের মামলায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখসহ সাত আসামির জামিন মেলেনি।

মতিঝিলে অবস্থিত নৌ আদালতের বিচারক জয়নাব বেগম বুধবার জামিনের আবেদন নাকচ করে আদেশ দেন।

এদিন কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তাদের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন জামিনের আবেদন করেন। অপর দিকে নৌ-আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করেন।

আসামিদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন জাহাঙ্গীর হোসেন। পাশাপাশি একই ঘটনায় একাধিক মামলা করার ফলে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টিও আদালতে তুলে ধরেন তিনি।

নৌ-দুর্ঘটনায় মামলার বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘পুলিশ যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে, সেই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাই মানে না। এটা দুঃখজনক।’

এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বেল্লাল হোসাইন আদালতকে বলেন, ‘একই ঘটনায় দুইবার বিচার করা অসাংবিধানিক।’

তিনি সংবিধান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘সংবিধানের ৩৫(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারির দায় চাপিয়ে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না। এ ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৪০৩ ধারা অনুযায়ী কারো প্রতি ডাবল জিয়োপার্ডি (দুই বার দণ্ডিত) করার সুযোগ নেই। এসব বিষয় ব্যাখ্যা করে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যথাযথভাবে মামলা করতে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

‘একই ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলা হয়েছে। তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন আসামিদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় তারা নৌযানে বা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তারা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী নয়। এটা অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা।

‘নিজের সম্পদ ও জীবন কেউ নষ্ট বা ঝুঁকিপুর্ণ করতে যাবে না। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে জামিন দেয়া হোক। তারা মামলার ট্রায়াল ফেস করবেন। হারাবেন বা পালাবেন না।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘যে সম্পদ থেকে আমরা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি তার দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। লঞ্চটি যথাযথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা না করার দায় মালিক এড়াতে পারেন না। এই দুর্ঘটনার দায় মালিককে অবশ্যই নিতে হবে। তারা লঞ্চটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পরিচালনা করেছেন।’

উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক আসামিদের জামিন নাকচ করে আদেশ দেন।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ১৯৭৬ (সংশোধিত ২০০৫) এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এসব ধারায় আসামিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ২৩ ডিসেম্বর অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪০ জনের বেশি যাত্রী প্রাণ হারান।

লঞ্চ দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদন আসার পর ২৬ ডিসেম্বর নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভবনে অবস্থিত আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আসামিরা হলেন-লঞ্চের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির তিন মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামিম আহম্মেদ ও মো. রাসেল আহাম্মেদ। এ ছাড়া ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম। ফেরদৌস হাসানকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর