শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটেবাড়ি থেকে অঞ্জলী গাঙ্গুলি নামের এক বৃদ্ধাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে ওই নারীর মাথা ফেটে যায়।
অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূ ও নাতনি মিলে ভিটে দখলে নিতে তাকে বের করে দেন।
শুক্রবার বিকেলে পৌর শহরের উত্তর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নালিতাবাড়ীর উত্তর বাজার মহল্লার অমল কান্তি গাঙ্গুলি গত বছর ১৫ মে মারা যান। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী আছেন। তিনি প্রধান সড়কের পাশে ৪ শতাংশ জমিতে বাড়ি ও দোকান রেখে যান।
অমল কান্তির মৃত্যুর পর দুই ছেলে জমি বণ্টন করতে গেলে বড় ছেলে অসীম গাঙ্গুলি বাড়ির সব জমি তার নামে লেখা রয়েছে বলে দাবি করেন। ছোট ভাই অনুজ গাঙ্গুলি বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সমাজের মুরুব্বিদের কাছে আবেদন করেন।
স্থানীয়রা জানান, জনপ্রতিনিধিরা দুই ভাইকে সমান ভাগ করে বাসার সীমানায় ইটের দেয়াল তুলে দেন। এছাড়া বাবার জীবদ্দশায় তার কাছ থেকে কৌশলে লিখে নেয়া সব জমির অর্ধেক ছোট ভাইকে লিখে দেয়ার নির্দেশ দেন। অসীম তখন লিখে দিতে রাজি হলেও পরে গড়িমসি শুরু করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের ৭০ বছর বয়সী মা অঞ্জলী গাঙ্গুলি বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর রেখে যাওয়া দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার বড় ছেলে অসীমের স্ত্রী উমা গাঙ্গুলি ও কন্যা (বৃদ্ধার নাতনি) ঐহী গাঙ্গুলি বৃদ্ধাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ সময় ঐহী ঘাড় ধরে ধাক্কা দিয়ে পাকা রাস্তায় দাদিকে ছুঁড়ে ফেলে দেন। বৃদ্ধা রাস্তায় পড়ে মাথা ফেটে গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা আহত বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ বিষয়ে অসীম বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে অবস্থান করায় মাকে সরিয়ে দিতে যাই। এ সময় মা আমাদের লাঠি পেটা করেছেন।’
এক পর্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ‘পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ঘটনার পর থেকে ঐহী গাঙ্গুলি একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে বসে আছেন। এ জন্য তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
ওসি আরও জানান, এখনও কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।