ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কাওয়ালি আসরে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে ধিক্কার সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পিপলস অ্যাকটিভিস্ট কোয়ালিশন নামের একটি সংগঠন। তবে পুলিশের বাধায় সমাবেশটি শুরু করতে পারেননি আয়োজকরা।
আয়োজকদের দাবি লাঠিচার্জ করে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
তবে পুলিশের দাবি কোনো লাঠিচার্জ করা হয়নি।
সমাবেশ আয়োজকদের অন্যতম মেহরাব পিয়াস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিএসসির কাওয়ালি আসরে ছাত্রলীগের ঘৃণ্য হামলার কারণে আজকে আমরা ধিক্কার সমাবেশের আয়োজন করেছি। পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমরা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে দাঁড়াতেই পুলিশ আমাদের ব্যানার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। আমরা যেতে না চাইলে আমাদের লাঠিচার্জ করা হয়। পরে আমাদের ধাওয়া দিয়ে কাঁটাবন মসজিদ পর্যন্ত তাড়িয়ে দেয়৷’
পুলিশের লাঠিচার্জে তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি এ আয়োজকের।
তবে শাহবাগ থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের (করোনা) বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে তারা সমাবেশের চেষ্টা করেছে। তারা ভদ্র মানুষ। তাদের নিষেধ করার পর তারা চলে গেছে।’
লাঠিচার্জের অভিযোগের বিষয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘লাঠিচার্জের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা দশ-পনেরো জন ছিল। তাদের ওপর কী লাঠিচার্জ করব।’
এর আগে বুধবার ঢাবি ক্যাম্পাসে আয়োজন করা কাওয়ালি আসরে হামলার প্রতিবাদে পরদিন একই স্থানে ফের কাওয়ালি এবং প্রতিবাদী গান গাওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালি ব্যান্ড সিলসিলা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তাদের গান পরিবেশন করার কথা রয়েছে।
টিএসসিতে কাওয়ালি আসরে হামলার প্রতিবাদে সেদিন রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন বামপন্থি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা হামলায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে জড়িতদের বিচার দাবিতে স্লোগান দেন।
টিএসসির পায়রা চত্বরে আয়োজিত কাওয়ালি আসরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় মঞ্চ ভাঙচুর করে একদল ছাত্র। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান। হামলায় অনুষ্ঠানে আসা শ্রোতা-দর্শক, আয়োজক ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
হামলার পর রাতে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এলে তার পদত্যাগ দাবিতেও স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তিনি নিজ কার্যালয়ে ফিরে যান। পরে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে তার পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় প্রক্টর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম তোমাদের বক্তব্য শোনার জন্য। কিন্তু তোমরা বক্তব্য না শুনেই আমি যা করিনি তা যুক্ত করে স্লোগান দিচ্ছ। এখন আবার বিচারের দাবিতে আমার কাছে এসেছ। তোমাদের কাছ থেকে এ রকম ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আশা করিনি।’
পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
রাত ৮টার দিকে কাওয়ালি আসরের আয়োজকরা এসে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে প্রক্টর অফিসের সামনেই কাওয়ালি গান পরিবেশন করেন।
হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালি ব্যান্ড ‘সিলসিলা’র লুৎফুর রহমান এখন থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার টিএসসিতে কাওয়ালি গান গাওয়ার ঘোষণা দেন।