দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় আজ থেকে শুরু হয়েছে সরকারের বেঁধে দেয়া নানা বিধিনিষেধ। তবে এবার বিধিনিষেধ শুরুর দিন আগের মতো কাঁচাবাজারে কোনো হুড়োহুড়ি দেখা যায়নি। প্রভাব পড়েনি দামেও।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথম দিন অন্যান্য দিনের মতোই বেচাকেনা হয়েছে নিত্যপণ্য। বরং মাংসের বাজারে কমেছে মুরগির দাম। তবে বিক্রেতারা বলছেন, শেষ বিকেলে এবং শুক্রবার বাজারে কিছুটা চাপ বাড়তে পারে।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর করতে বলা হয়।
তবে করোনা শুরুর দিনগুলোতে বিধিনিষেধের প্রথম দিন যেমন কাঁচাবাজারে প্রভাব পড়ত, এবার তেমনটা একেবারেই দেখা যায়নি।
ফার্মগেটের সবজি বিক্রেতা মইজ উদ্দিন বলেন, ‘সবজির দাম বাড়ে নাই। এমনিতেই কাঁচাবাজারে দুই-চার টাকা বাড়ে-কমে। সকালে কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি মাল আনছি, এক সপ্তাহ আগের দামেই।’
এই সবজি বিক্রেতা আরও বলেন, যারা চাকরি করে, তারা বাজারে আসে শুক্রবার। অনেকে আবার অফিস থেকে যাওয়ার সময় বাজার করে বাসায় নেয়। তাই বিকেলে বা আগামীকাল বাজারে একটু জিনিসপত্রের ওপর চাপ পড়তে পারে। তবে দাম বাড়বে বলে মনে হয় না। কারণ কোনো কিছু তো বন্ধ করে নাই, সব তো খোলা।
কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটের চারুলতা কাঁচাবাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২২ টাকা, টম্যাটোর কেজি ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মাঝারি আকারের ফুলকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, শালগম ও মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, মালের দাম আগের মতোই আছে। দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। বিদেশি রসুনের দাম বেশি, কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা; দেশিটা ৫০-৬০ টাকা। আদা দেশি ৮০ টাকা কেজি। আমদানি আদার কেজি ১৪০ টাকা। দেশি মসুর ডালের কেজি ১১০ টাকা, আর মোটা মসুর ডাল ৮০ টাকা।
কাঁচা পণ্যের ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন না বাড়ইলে কী অইব, আগের তুনইতো দাম বাড়তি আছে। ১৫২ টাকায় তেল কিনি, ১৬০ টাকা লিটার বেচি। বাজার তুন দোকানে আনার খরচও আছে। আগে ৯২ টাকা কিনি ১০২ টাকা বেচতাম। এখন টিয়া বেশি খাটাইয়া আগের তুন লাভ কম হয়। দাম বাড়ায় মানুষও কম কম কিনে। সকাল ৮টার তুন রাইত ১টা পর্যন্ত দোকানে বইয়াও হোলাহাইন লই চইলতে কষ্ট অয়।’
মাংসের বাজার রয়েছে আগের মতোই। আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে মুরগির দাম। তিন দিন আগে ১৮০ টাকার ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায়। পাকিস্তানি কক ১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকায়। তবে আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি, ৪২০ টাকা। এ ছাড়া গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিজয় সরণির কলমিলতা বাজারের মুরগি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে তো মুরগির বাজার চড়া আছে, এখন একটু দাম কমে আসছে। গাড়িঘোড়া বন্ধ না থাকলে দাম আর বাড়ার কথা না। আরও কমতে পারে।’