নগরবাসীর ক্ষোভের মুখে অবশেষে পানির বিল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
বুধবার সিটি করপোরেশনের মাসিক বৈঠকে পানির বিল কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
নগর ভবনে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
গত বছরের জুলাইয়ে পানির বিল প্রায় দিগুণ বাড়িয়ে দেয় সিটি করপোরেশন। এ নিয়ে নগরজুড়ে ক্ষোভ ছিল। বর্ধিত বিল প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিদিনই নগরীতে বিক্ষোভ করছিলেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দিয়ে পানির বর্ধিত বিল প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নাগরিকদের দাবি ও সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পুনরায় পানির বিল নির্ধারণ করা হয়েছে।
‘যারা অবৈধভাবে পানির সংযোগ নিয়েছেন, তারা ৩০ জানুয়ারির মধ্যে অনুমোদন করিয়ে নিতে পারবেন। অন্যথায় করপোরেশনের অভিযানে সব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
আগামীতে পানির বিলের জন্য ডিজিটাল মিটার স্থাপন করবে বলেও জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
মাসিক সভায় তিন ক্যাটাগরিতে চার স্তরের ডায়ামিটারে (ব্যাস) ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে পানির বিল।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিক সংযোগে প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি ডায়ামিটারের লাইনে বিল ৩০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বিল ৬০০ টাকা এবং এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক সংযোগে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে মাসিক বিল ৭০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার ১০০ টাকা ও এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বিল ২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে মাসিক বিল ৭০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার ১০০ টাকা ও এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি সংযোগে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে মাসিক বিল ৭০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার ১০০ টাকা ও এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনের ক্ষেত্রে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়।
গত বছরের জুনের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনের ক্ষেত্রে আবাসিক গ্রাহকদের ২০০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা দিতে হতো। ৮০০ টাকা দিতে হতো বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি গ্রাহকদের; আগে তারা গুনতেন ৪০০ টাকা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র তৌফিক বক্স লিপন বলেন, ‘কয়েক মাস যারা বর্ধিত বিল দিয়েছেন তাদের টাকা পরবর্তী সময়ে সমন্বয় করা হবে।’
নগরে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় আট কোটি লিটার। তবে সিটি করপোরেশন প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ কোটি লিটারের মতো পানি সরবরাহ করতে পারে।
প্রতি মাসে পানি উৎপাদন বাবদ গড়ে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা খরচ হয় করপোরেশনের। বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে প্রতি মাসে ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ টাকা আদায় হয়।