বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আরও স্পষ্ট করোনার তৃতীয় ঢেউ

  •    
  • ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৪২

শুক্রবার শনাক্তের হার আরও বেড়ে ৫ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শনিবার এই হার আরও বেড়ে হয় ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। তৃতীয় দিনে তা আরও বেড়ে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ হয়ে গেছে। টানা ১৪ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে বাংলাদেশ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে ধরে নিতে হবে।

করোনার সংক্রমণ, পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার আরও বেড়েছে। টানা দুই দিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হওয়ার পর এবার তা ৭ শতাংশ ছুঁইছুঁই হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে দেশ যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করেছে, সে বিয়ষটি আরও স্পষ্ট হলো।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৪৯১ জন নতুন করোনা রোগী পাওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগের দিন রোগী পাওয়া গিয়েছিল ১ হাজার ১১৬ জন।

এ নিয়ে ২০২০ সালের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭০০ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৯০৫ জন।

রোববারের চেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গিয়েছিল ১১১ দিন আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর। সেদিন সারা দেশে ১ হাজার ৫৫৫ জন রোগী পাওয়ার কথা জানিয়েছিল অধিদপ্তর।

রোগীর পাশাপাশি পরীক্ষার বিপরীতে রোগীর শতকরা হারও বাড়ছে। আগের দিন যে হার ছিল ৫ দশমিক ৭৯, সেটি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

শনাক্তের এই হার গত ১৯ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

করোনার উপসর্গও যে বাড়ছে, সেটি বলে দেয় পরীক্ষার চিত্রই। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২১ হাজার ৯৮০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ২৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

করোনার প্রকোপ আবার বেড়ে চললেও মৃত্যুর বিষয়টি এখনও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণেই বলা চলে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মারা গেছেন তিনজন। এদের মধ্যে ঢাকায় দুজন ও চট্টগ্রামে একজন।

যে তিনজন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৬০ বছর বয়সের বেশি দুজন। একজনের বয়স ২০ বছরের বেশি।

এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ২৮ হাজার ১০২ জন।

তৃতীয় ঢেউ কি চলেই এলো?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি থেকে এর নিচে নেমে এলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ধরা হয়। উল্টোপথে যাত্রা অর্থাৎ সংক্রমণের হার ৫-এর নিচে থেকে ৫ ছাড়ালে পরবর্তী ঢেউ আঘাত হেনেছে ধরা হয়।

তবে এক দিনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। পরপর দুই সপ্তাহ যদি সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি বা কম থাকে, তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বা পরবর্তী ঢেউ আঘাত হেনেছে বলে ধরা হয়।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।

এর পর থেকে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ক্রমেই কমছিল। একপর্যায়ে ২ শতাংশের নিচে নেমে ১ শতাংশের কাছাকাছি চলে আসে। তবে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার ক্রমে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ২ ছাড়িয়ে ৩ এবং চলতি সপ্তাহে ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

গত বুধবার পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, মঙ্গলবার ছিল ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

শুক্রবার শনাক্তের হার আরও বেড়ে ৫ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শনিবার এই হার আরও বেড়ে হয় ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞ মত

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংক্রমণের চিত্র দেখে মনে হচ্ছে, দেশ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করেছে। এটাকে আমরা শুরু বলতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘এই ঢেউ ভয়াবহ না কি মৃদু হবে এটা অনেকগুলো বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। যারা পজিটিভ বলে শনাক্ত হচ্ছে, তাদের আমার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পাচ্ছি কি না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের টিকা আওতায় আনতে পারছি কি না। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বাধ্য করতে পারছি কি না।’

তিনি বলেন, ‘যারা স্বাস্থ্যবিধি মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা আওতায় আনতে হবে।

‘আমাদের টিকা দিতে হবে ১৩ কোটি ৮২ লাখ মানুষকে। তবে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে মাত্র ৭ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। এখনও বাকি সাড়ে ৬ কোটি। এই লোকদের দ্রুত সময়ে নিবন্ধন করে টিকার আওতায় আনতে হবে। যাদের নিবন্ধনের সক্ষমতা নেই, তাদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর