আগুন আতঙ্কে মধ্যরাতে চাঁদপুরে আটকা পড়া বরিশালগামী সুরভী-৯ লঞ্চের স্টাফদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। হামলায় আহত হয়েছেন দুই সংবাদকর্মীও।
এ ঘটনায় লঞ্চের ম্যানেজার মো. মিজানকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান লঞ্চের পরিচালক রেজিন-উল-কবির।
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার সামনেই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চাঁদপুর থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আগুন নেই তা নিশ্চিত হওয়ার পর লঞ্চটি ছাড়া হয়। সেটি রোববার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে।
হামলায় আহত চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বরিশাল অফিসের ভিডিওগ্রাফার রুহুল আমিন বলেন, ‘লঞ্চ থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার ঘটনাটি যেসব যাত্রী মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে দিয়েছিলেন, সেসব যাত্রীকে খুঁজে ব্যাপক মারধর শুরু করেন স্টাফরা।
‘মারধরের ভিডিও করতে গেলে লঞ্চের ম্যানেজার মিজানের নেতৃত্বে স্টাফরা আমাকে এবং আমার সহকর্মী ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ভিডিও গ্রাফার দেওয়ান মোহনের ওপর হামলা করেন। লাঠি দিয়ে আমাদের মারধর করেন।’
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বরিশাল ব্যুরোপ্রধান কাওছার হোসেন রানা জানান, এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন তিনি।
যাত্রীদের ওপর স্টাফদের হামলার ঘটনার ভিডিও থেকে নেয়া ছবিসুরভী-৯ লঞ্চের যাত্রী হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুরঞ্জিৎ দত্ত লিটু বলেন, ‘আমরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলন শেষে ঢাকা থেকে ফিরছিলাম। পথের মাঝে যা হওয়ার হয়েছে। বরিশাল ঘাটে পৌঁছানোর পর আমাদের ছাত্র-যুব-ঐক্য পরিষদের নেতা আবির কুন্ডু ও সুজয়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় লঞ্চের স্টাফরা।
‘সারা রাত ঘুমাতে পারেনি লঞ্চের যাত্রীরা। এরপর এই লঞ্চ স্টাফরা হামলা করেছে। এই লঞ্চে যাত্রীসেবা নয়, যাত্রীদের জিম্মি করা হয়।’
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার সামনেই ঘটনা ঘটেছে। আমি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
মাঝ নদীতে আগুন আতঙ্কে শনিবার মধ্যরাতে বরিশালগামী এমভি সুরভী-৯ লঞ্চকে চাঁদপুরে আটকে দেয় নৌ-পুলিশ।
যাত্রীদের কাছ থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে চাঁদপুরের মোহনপুর লঞ্চঘাটে লঞ্চটি আটকে দেয়া হয়।
নৌ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা গিয়ে লঞ্চ পরীক্ষা করে জানান, আগুন লাগেনি; সাইলেন্সার অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে যাওয়ায় ধোঁয়া বের হচ্ছিল। সে কারণে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।