পাকিস্তান থেকে কনটেইনারবাহী দুটি জাহাজ কেনার চুক্তি সইয়ের ৩৩ বছর পর তা বাতিল করেছে সরকার।
সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই চুক্তি বাতিল করা হয়। বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য দুটি কনটেইনার শিপ কেনার চুক্তি হয়। তখনকার মন্ত্রিসভায় নেয়া এ সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার বাতিল করে মন্ত্রিসভা।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য কনটেইনারবাহী দুটি জাহাজ কিনতে ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর তখনকার মন্ত্রিসভা পাকিস্তানের সঙ্গে ৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করেছিল।’
‘আজ পর্যন্ত তারা শিপ দেয়নি, কিছুই হয়নি। পাকিস্তান সরকার তাদের কারাচি শিপিয়ার্ডকে ৮ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দিয়েছিল। আমরাও টাকা দেয়নি। চু্ক্তিটি এতদিন হওয়ার পরেও কিছু হয়নি বলে মন্ত্রিসভা চুক্তিটি বাতিল করে দিয়েছে।’
দেশে রপ্তানি বাণিজ্যে জাহাজ নিমার্ণ নতুন সম্ভাবনার দার খুলে দিয়েছে। করোনা মহামারিতে তা কিছুটা ঝিমিয়ে পরলেও জাহাজ রপ্তানিতে আবারও অনেক অর্ডার আসতে শুরু করেছে তৈরি পোশাকের মতো।
বাংলাদেশের জাহাজ রপ্তানি খাত নিয়ে সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছে চীনের জাহাজ নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন চাইনিজ অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ন্যাশনাল শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি (সিএএনএসআই)।
সংগঠনটি বলেছে, ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জাহাজ রপ্তানির জন্য ১৫০ কোটি (১.৫ বিলিয়ন) ডলার অর্ডার পাবে। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১২ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে জাহাজ রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ১ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার আয় করেছিল। বিশ্ববাজারে সম্ভাবনা থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ধরা হয়, কিন্তু এক টাকার জাহাজও রপ্তানি করতে পারেননি রপ্তানিকারকরা। শুধু তা-ই নয়, গত বছরের মার্চে মহামারি শুরুর পর এই দেড় বছরে কোনো রপ্তানি হয়নি।
সে কারণে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় মাত্র ২ হাজার ডলার। মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নামমাত্র এই লক্ষ্য ধরে সরকার।