করোনা মহামারির কারণে দেশে কত শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে এর হিসাব বের করার উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এজন্য জেলা পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে চিঠি দেয়া হবে।
মঙ্গলবার মাউশির পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে কী পরিমাণ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, ভর্তি হয়েছে, কতজন শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে আসছে না, সেসব তথ্য সংগ্রহের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। আশা করছি আগামী রোববার দেশের সব মাঠ কর্মকর্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠানো হবে। তাতে ছক আকারে ইমেইলে তথ্য পাঠাতে বলা হবে। সেটি চূড়ান্ত করতে গতকাল সভা করে প্রশ্নমালা ঠিক করা হয়েছে।’
অধ্যাপক আমির হোসেন আরও বলেন, করোনার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ।
তবে মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়েছে। তার পরিপেক্ষিতে বোঝা যাচ্ছে মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখার মধ্যে রয়েছে, বাকি সাত শতাংশ ঝরে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটি আনুমানিক হিসাব। শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার নির্ণয় করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাদের নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠাতে বলা হবে।
করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ আর মাধ্যমিকে এই হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।
এই হার ছিল ক্রম হ্রাসমান। তবে করোনার কারণে সেটি আবার বাড়বে বলে আশঙ্কা ছিল আগেই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেড় বছর পর গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। খুলে দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও।
তবে ক্লাস হয়েছে সীমিত পরিসরে। প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হয়নি। শুধু এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হয়েছে। আর অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম, নবম শ্রেণিতে দুই দিন এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক দিন করে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছে।