বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির পদ হারিয়ে তৈমূর বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১৮:০৪

‘আলহামদুলিল্লাহ। এখন আর আমার কোনো বাধা নেই। আমি মনে করি, আমার দল আমাকে একটা উপকার করছে। আমি রাস্তার মানুষ ছিলাম, রাস্তায় রাস্তায় ছিলাম, বস্তিতে ছিলাম এখন সেখানে ঘুরব।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের পদ হারালেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে রাজি নন তৈমূর আলম খন্দকার। ২০১১ সালের প্রথম সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তে শেষ মুহূর্তে সরে গেলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি ভোটে লড়ে যাবেন।

এক দশক আগের সেই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। তবে পাঁচ বছর আগের ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীকেই। সেই বছর ধানের শীষ চেয়েও পাননি তৈমূর। এবার বিএনপির সিদ্ধান্ত, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ভোটে না যাওয়ার। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো রাজধানী লাগোয়া এই জনপদটিতেও ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর’ পেছনে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মোকাবিলায় তৈমূর পেয়েছেন হাতি। তিনি যখন বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারে ব্যস্ত, সে সময় সোমবার একটি বার্তা পান তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তৈমূরের ভোটে লড়ার ইচ্ছার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আর তিনি এখন আর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নন।

দলের এই সিদ্ধান্ত জানার পর তৈমূর কী ভাবছেন? তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। এখন আর আমার কোনো বাধা নেই।’

দল সিদ্ধান্ত জানানোর পর নারায়ণগঞ্জে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা। সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ভোটের আগে আগে তার সরে যেতে বাধ্য হওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দল এখানে উপকৃত হইছে কি না জানি না, জাতি কোনো উপকৃত হইছে কি না জানি না, কিন্তু সরকার দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।’

‘অনেকে এবারও ভাবতে পারেন, সরকারদলীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে আমাকে দলের পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমার দল আমাকে একটা উপকার করছে। আমি রাস্তার মানুষ ছিলাম, রাস্তায় রাস্তায় ছিলাম, বস্তিতে ছিলাম এখন সেখানে ঘুরব।

‘এবার জনগণের জন্য যদি আমার রাস্তায় মৃত্যু হয়, হবে৷ রাজপথে আমার জন্ম, রাজপথে আমার মৃত্যু হবে। আমার ভাগ্যের মালিক আল্লাহ।’

‘আমাকে মুক্ত করে দিয়েছে’

তৈমুর বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আমাকে জনগণের জন্য মুক্ত করে দিয়েছেন। এখন আমি রিকশাওলাদের তৈমূর রিকশাওলাদের কাছে ফিরে যাব, ঠেলাওলাদের তৈমূর, তাদের কাছে ফিরে যাব, আমি গণমানুষের তৈমূর, তাদের কাছে ফিরে যাব। আমার ভাগ্যের মালিক একমাত্র আল্লাহ৷’

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের স্মৃতি তুলে ধরে তৈমূর বলেন, ‘২০১১ সালে আমার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল (সমর্থন)। ওই নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের কারণে আমি ভোটের ৫ ঘণ্টা আগে সরে গেছি। আমি কখনও দলকে প্রশ্ন করি নাই আমাকে কেন সরিয়ে দেয়া হলো, কেন আমাকে প্রত্যাহার করা হলো।’

২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কাউকে সমর্থন জানায়নি। একই দলের দুই নেতা সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমান- দুজনই আওয়ামী লীগের সমর্থন চেয়ে কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দল কাউকে সমর্থন না দিয়ে উন্মুক্ত করে দেয়।

আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। বিএনপির জন্য সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু ভোটের আগের রাতে দল সমর্থিত প্রার্থী তৈমূরকে সরে যেতে নির্দেশ আসে। ধারণা করা হয়, শামীম ওসমান যেন জিততে না পারেন, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত। তবে কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। সেই নির্বাচনে শামীমকে এক লাখেরও বেশি ভোটে হারিয়ে মেয়র হন আইভী।

পাঁচ বছর পরের নির্বাচন হয় দলীয় প্রতীকে। সেবার আইভীর হাতে প্রতীক তুলে দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি প্রতীক দেয় সাখাওয়াত হোসেনকে। তবে তিনি সুবিধা করতে পারেননি। ৮০ হাজারের মতো ভোটে হেরে যান তিনি।

বিএনপি ভোটে না আসার সিদ্ধান্ত নিলেও সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে বিএনপির তিনজন নেতা আগ্রহী হন ভোটে অংশ নিতে। সাখাওয়াতও তাদের একজন। তবে তৈমূর প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিলে বিএনপির দুই নেতা সরে যান তাকে সমর্থন দিয়ে।

এই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে তৈমূরের পরিচয় হয়ে উঠেছে ‘বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে। তিনি বলেছেন, প্রতীক না পেলেও তার চেহারাই ধানের শীষ।

এ বিভাগের আরো খবর