বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য কঠোর নীতিমালা প্রয়োজন

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ২৩:১৯

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ কতটা জরুরি তা আমরা করোনা পরিস্থিতিতে উপলব্ধি করেছি। প্রধানমন্ত্রী ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা দিতে চেয়েও তা পুরোপুরি পারেননি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি না থাকার কারণে। সরকারি তথ্য ভাণ্ডারের দুর্বলতার কারণে মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা যায়নি।’

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে লেনদেনের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও। তাই গ্রাহকের অর্থ বা আমানতের সুরক্ষা দিতে কঠোর নীতিমালা ও তার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এই খাতে কোনও সংকট তৈরি হলে তা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে। সঠিক নীতি-সহায়তার অভাবে লোকসান করছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।

স্বাধীনতার পর দীর্ঘ যাত্রায় এগিয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। তবে জনসংখ্যার বড় অংশই এখনও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে রয়ে গেছে। কারণ ব্যাংক খাত শুধু অর্থের যোগান দেয় না, আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আর্থিক খাত সম্প্রসারণে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হলেও ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়নি।

মঙ্গলবার ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি: প্রয়োজনীয়তা ও চর্চা’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব অভিমত উঠে আসে।

রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায়।

ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, গবেষণা পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক ও পরিচালক ড. বজলুল এইচ খন্দকার।

‘বাংলাদেশের উন্নয়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ কতটা জরুরি তা আমরা করোনা পরিস্থিতিতে উপলব্ধি করেছি। প্রধানমন্ত্রী ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা দিতে চেয়েও তা পুরোপুরি পারেননি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি না থাকার কারণে। সরকারি তথ্য ভাণ্ডারের দুর্বলতার কারণে মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা যায়নি।’

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বিস্তার ঘটলেও তাতে নীতি-সহায়তার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিকাশের মাধ্যমে আমরা এখন টাকা পাঠানো, কেনাকাটা, হাসপাতালের বিল, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ সরকারি সব পরিষেবার বিল ও বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠাতে পারছি। তবে বিকাশের মতো আর কেউ পারছে না। নগদ কিছুটা করলেও এখনো তাকে লাইসেন্স দেয়া যায়নি। মানুষ বিশ্বাসহীনতায় ভুগছে।

‘সরকারের নীতি-সহায়তা নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমও শুরু করা যায়। সিটি ব্যাংকের সহায়তায় ক্ষুদ্র ঋণ চালু করেছে বিকাশ। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষুদ্র সংস্থাগুলোর উচ্চ সুদ হারের ঋণ থেকে বের হয়ে আসতে পারবে।’

‘সামাজিক সুরক্ষা ও ব্যক্তি পর্যায়ে সরকারের অর্থ বিতরণের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকার বাজেটের মাধ্যমে ২৮ হাজার কোটি টাকা সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় করে। এই অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে বিতরণ হলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে।

‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা সব খাতেই গর্ব করার মতো সফলতা পেয়েছি। তবে বৈষম্য বেড়েছে।’

ইআইইউ গ্লোবাল মাইক্রোস্কো ফিন্যান্স রিপোর্ট-২০২০ অনুযায়ী, সামগ্রিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে ৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ৪৪তম বলে আরেকটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেন ড. বজলুল এইচ খোন্দকার।

‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল: মূল সমস্যা এবং বাস্তবায়ন’ শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য দূর করতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উচিত ডিজিটাল ফাইন্যান্সিং সেবার আওতায় দরিদ্র ও নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণত আইনের আলোকে কাজ করেন। নতুন করে ইনোভেশন খুব কম হয়। তবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য আমরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সহজতর করছি। এজেন্ট ব্যাংকিং ও ব্যাংকের উপ-শাখা বাড়াচ্ছি।

আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে পিছিয়ে থাকার জন্য দেশের মানুষের মানসিকতাও একটি কারণ। আমাদের মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় করে। অথচ অনেক দেশে এটি ২৮ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর