রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডে দ্বিতীয় দফা ভোট গণনায় ফল পুরো পাল্টে গেছে।
রোববার ইউসুফপুর ইউনিয়নের বেলঘরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সদস্য প্রার্থী আবু তালেব শূন্য ভোট পাওয়ার খবরে তার সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পুনরায় ভোট গুনতে বাধ্য হন নির্বাচন কর্মকর্তারা। এতে জয়ী ঘোষণা করা ব্যক্তির চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন আরেক প্রার্থী। তাকেই নতুন করে সদস্য ঘোষণা করতে হয়েছে। আর আবু তালেব পান ৮৩ ভোট।
আবু তালেব কোনো ভোট না পাওয়ায় প্রশ্ন ওঠে, নিজের ভোট ও পরিবারের সদস্যদের ভোট গেল কোথায়। ওই কেন্দ্রের অন্য প্রার্থীরাও কারচুপির অভিযোগ করেন।
ওয়ার্ডের পরাজিত সব প্রার্থী পুনরায় ভোট গণনার দাবি তোলেন। শেষ পর্যন্ত পুনরায় ভোট গণনা করে দেখা গেল আবু তালেব পেয়েছেন ৮৩ ভোট। সেই সঙ্গে বিজয়ী সদস্যের নামও বদলে যায়।
দ্বিতীয়বার গণনার পর সদস্য নির্বাচিত হন রিংকু আহমেদ।ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে শুরু হয় গণনা। সন্ধ্যার পর ওই কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল জব্বার। তার ঘোষণা অনুযায়ী মোরগ মার্কার প্রার্থী আবু তালেব কোনো ভোটই পাননি। সেখানে সদস্য ঘোষণা করা হয় নিজাম উদ্দিন সাহজাদাকে।আবু তালেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এর আগে একবার মেম্বার ছিলাম। এবার একটি ভোটও পাব না, এটা কোনোভাবেই মানার নয়। আমার নিজের ভোট, পরিবার, আত্মীয়স্বজনের ভোট কোথায় গেল? ফল ঘোষণার পরই স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা আবার ভোট গণনার দাবিতে বিক্ষোভে নামেন।
‘ততক্ষণে নির্বাচনের সংশ্লিষ্টরা ব্যালট বাক্সসহ ভোটের সরঞ্জাম উপজেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুলে নেন। আমার সমর্থক ছাড়াও অন্য প্রার্থীর সমর্থকরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে ভোট গণনার দাবি জানান। শেষ পর্যন্ত আবার ভোট গুনতে তারা বাধ্য হন।’
আবু তালেব বলেন, ‘দ্বিতীয় গণনায় সবার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যাই বদলে যায়। আমি ৮৩ ভোট পেয়েছি। প্রথমে এখানে তালা প্রতীকের প্রার্থী সাহাজাদাকে বিজয়ী করা হয়। পরে ফল বদলে যায়। এখানে জয়ী হয়েছেন ফুটবলের প্রার্থী রিংকু আহমেদ।’ দ্বিতীয়বার ভোট গণনার পর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল জব্বার বলেন, ‘ব্যালট পেপারের একটি বান্ডেল গণনার বাইরে থেকে গেছে। এ ভুলের কারণে আবু তালেব শূন্য ভোট পেয়েছিলেন। পরে ব্যালট বান্ডেল খুঁজে পেলে পুনরায় গণনায় ফল বদলে গেছে।’ চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, ‘এক প্রার্থী নিজের ভোটও পাননি, এই খবর জানার পর আমি দ্বিতীয়বার গণনার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছিলাম। পুনরায় গণনার পর জটিলতার অবসান হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রিসাইডিং অফিসারের গাফিলতি রয়েছে। এতে আমিও বিরক্ত। এ জন্য নির্বাচন আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’