বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৭৩ রেলক্রসিংয়ের ৬৫টিতেই নেই গেটম্যান

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:১৯

ঠাকুরগাঁও জেলায় ৭১ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। এই পথে রেলক্রসিংয়ের সংখ্যা ৭৩টি, যার মধ্যে ৬৫টি রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান নেই। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষের তালিকার বাইরে রয়েছে আরও ১৮টি রেলক্রসিং।

ঠাকুরগাঁও জেলায় ৭১ কিলোমিটার রেলপথে ক্রসিং আছে ৭৩টি। এরমধ্যে ৬৫টি রেলক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান।

অরক্ষিত এসব রেলক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক নোটিশ টানিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি সেই নোটিশ বোর্ডে লেখা হয়েছে, যেকোনো দুর্ঘটনার দায় শুধু পথচারী ও যানবাহন চালকদের।

স্থানীয়রা বলছেন, অরক্ষিত রেলক্রসিং ও অধিকাংশ স্থানে গেটম্যান না থাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, অসচেতনতার কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর, আখানগর, রুহিয়া, শিবগঞ্জ, পীরগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার রেলক্রসিংয়ে দেখা যায়, কোনো গেটেই গেটম্যান নেই। অরক্ষিত রেলক্রসিং দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী ও যানবাহন।

এরমধ্যে একটি রেলক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ডে লেখা ছিল, ‘সাবধান, এখানে কোনো গেটম্যান নাই। পথচারী ও সব ধরনের যানবাহনের চালক নিজ দায়িত্বে পারাপার করিবেন এবং কোনোরূপ দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে নিজেই বাধ্য থাকিবেন।’

কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতায় বিভিন্ন রেলক্রসিংয়ে মাঝে মধ্যেই হয় দুর্ঘটনা। প্রাণহানিও হচ্ছে।

রেলক্রসিংগুলোতে সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ড দিয়েই কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব শেষ করেছে। ছবি: নিউজবাংলা

গত ১১ জুন মোটরসাইকেলে পীরগঞ্জ উপজেলার জগধা এলাকার অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন জেলা জজ আদালতের জারিকারক রুহুল আমিন ও আব্দুস সেবাহানের। একই উপজেলার সেনুয়া বাজার এলাকার অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার ১২ ফেব্রুয়ারি সবুজ নামে এক পথচারী এবং ২ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে মোজাফফর হোসেন নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়।

২০২০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রহমান আলী নামে একজন প্রাণ হারান রুহিয়া থানা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায়। ওই বছরের ২৪ মার্চ রুহিয়া ঘনিমহেষপুর মেম্বারপাড়া এলাকার অরক্ষিত রেলক্রসিং এলাকায় প্রাণ হারান জাহেদা বেগম নামে আরেক বৃদ্ধা।

ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে থেকে জানা গেছে, জেলায় ৭১ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। এই পথে ৭৩টি রেলক্রসিং রয়েছে। যার মধ্যে ৬৫টি রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান নেই। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষের তালিকার বাইরে রয়েছে আরও ১৮টি রেলক্রসিং। অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে শুধু সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ড দেয়া আছে।

ঠাকুরগাঁও শহর রোড এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গণি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি ঠাকুরগাঁও রোডের রেল ক্রসিংয়ের গেট বেরিয়ার নামছে না। রেল দেশের এত বড় একটা সেক্টর, অথচ জনগণের ছোট্ট এ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে প্রতিদিন। এটা লজ্জাজনক। ক্রসিংগুলোতে শুধু সতর্কতামূলক নোটিশ দিলেই তাদের কাজ শেষ, দেখে যা বুঝা যায়।’

আখানগর এলাকার হুমাইয়ুন কবির বলেন, ‘রেলক্রসিংগুলোতে সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ড দিয়েই কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব শেষ করে দিয়েছে। প্রায় সময় অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। তারপরও রেল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটা সাধারণ মানুষদের জন্য অনেক বিপদের।’

ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনের মাস্টার মোহাম্মদ আখতারুল বলেন, ‘জেলার ৭১ কিলোমিটার রেলপথে অসংখ্য অরক্ষিত রেলক্রসিং রয়েছে। সেগুলোতে গেটম্যান নেই। এ জন্য এলাকার মানুষ ও যানবাহনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।

‘প্রায় সময় এসব রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর