ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুনে দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট বন্ধ থাকায় রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে সার্জারি ওয়ার্ডে।
বেড ফাঁকা না থাকায় অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মেঝেতে। আবার অনেকের স্থান হয়েছিল সিঁড়িতে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে ৩০ জনকে হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। বাকিরা সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এসব নিশ্চিত করেছেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম। জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের সহায়তায় কাজ করছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের খাবার ও কম্বল দিচ্ছে তারা।
দগ্ধদের খোঁজখবর নিয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য শান্তি চুক্তি কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বরগুনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। দুপুরে তারা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
এদিকে বার্ন ইউনিট বন্ধ থাকায় দগ্ধরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
দগ্ধ রোগীর স্বজন জলিল উদ্দিন বলেন, ‘কোনো রকম মলম দিয়ে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকও নেই এখানে।’
সিনিয়র স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দগ্ধ আট শিশুসহ ৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে এসেছেন।
২০১৫ সালের ১২ মার্চ হাসপাতালের নিচতলায় আটটি শয্যা নিয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ চালু হয়েছিল। বিভাগে আটজন চিকিৎসক ও ১৬ জন নার্সের পদ রাখা হয়।
পরে রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিটটি ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। চালু থাকা পাঁচ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি রোগী বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গত বছরের এপ্রিলে হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এম এ আজাদের মৃত্যুর পর থেকেই অচল হয়ে পড়ে বার্ন ইউনিটটি।
সবশেষ ওই বছরের ১৫ মে ইউনিটটি বন্ধ করে দেয়া হয়।