রাত ৩টা বেজে ৫০ মিনিট। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর তীরে শত শত মানুষের বাঁচার আকুতি। অসহায় মানুষের চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হন ঝালকাঠি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির সাগর।
আগুনে পোড়া বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ থেকে দেড় শ যাত্রীকে তিনি উদ্ধার করেছেন বলে দাবি করেছেন।
নিউজবাংলার কাছে মর্মান্তিক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আগুন, আগুন বলে নদীর তীরে মানুষের চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হই। এসে দেখি দক্ষিণের রক্তিম আকাশ আর নদীর মধ্যে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে।
‘এরপর দ্রুত এলাকার ছোটো ভাইবেরাদারদের ডাকি। আমার ডাকে একে একে ২৪ জন কর্মী বের হন। তাদের নিয়ে চারটি ট্রলারে করে লঞ্চের দিকে এগিয়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আগুনের তাপে লঞ্চের কাছে যেতে পারছিলাম না। এরই মধ্যে লঞ্চ থেকে অনেক যাত্রী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ট্রলারের দিকে সাঁতরে আসেন। তাদের আমরা একে একে চারটি ট্রলারে তুলতে থাকি। এভাবে দেড় শ যাত্রীকে আমরা তীরে নিয়ে আসি।
মাঝনদীতে আগুন লেগে যায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে। ছবি: নিউজবাংলা‘ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা এলে তাদের লোকবল ও ট্রলার দিয়ে সহযোগিতা করে আরও অনেক যাত্রী এবং তিনটি মরদেহ উদ্ধার করি।’
কাউন্সিলর জানান, সূর্য ওঠার পর পুলিশ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মীরা উদ্ধারকাজে অংশ নেন। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে দগ্ধ হন শতাধিক যাত্রী।
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা মো. রায়হান নিউজবাংলাকে জানান, রাত ৩টা ২৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস খবর পায়। ৩টা ৫০ মিনিটে ১৫টি ইউনিট আগুন নেভানো শুরু করে। সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।