চুয়াডাঙ্গায় টানা কয়েক দিন শৈত্যপ্রবাহের পর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও জনজীবন এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে অনেকটাই স্থবির হয়ে আছে কর্মচাঞ্চল্য। সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল মানুষ। সকাল ৮টার পর সূর্যের দেখা মিললেও শীতের অনুভূতি কমছে না।
এমন আবহাওয়ায় ধানের বীজতলা নিয়েও দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। ঘন কুয়াশার কারণে নষ্ট হচ্ছে বীজতলা। এতে আগামী মৌসুমে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চাষিরা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিন চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। সোমবার তা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নেয়। তবে পরদিন থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে।
এমন শীতে ব্যাহত হচ্ছে জেলার কৃষিকাজ। তীব্র ঠান্ডার কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এ বছর ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শীতে বীজতলা নষ্ট হলে তা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে আছে শঙ্কা।
দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি এক বিগি জমিতে ধান লাগাব। তাই পাতু (বীজতলা) দিয়িচি। কিন্তু শীতে পাতু নষ্ট হয়ি যাচ্চি। পাতু নষ্ট হলি তো ধান লাগাতি পারমু না। আর ধান আবাদ না করলি খাব কী?’
সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ‘এ বচর দুই বিগি ধান লাগাব ভেবিচি। কিন্তু ধানের চারা নষ্ট হয়ি যাইচি। সকালে নেয়র (কুয়াশা) পড়চে। সব চারা পুড়ি কালো হয়ি গিয়েচে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মাজেদ জানান, তীব্র শীতে ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার বিষয়টিকে কোল্ড ইনজুরি বলা হয়। তাপমাত্রা বাড়লে তা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ সময় কৃষকদের একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। রাতে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সকালে পলিথিন সরিয়ে নিতে হবে, যেন রোদ ও বাতাস যেতে পারে। তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।