বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টির কয়েকজন সদস্যের দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার এক মানববন্ধনে সংস্থাটি এ দাবি জানায়।
মানববন্ধনে আজিম উদ্দিন আহমেদ, এম এ কাসেম, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, বেনজীর আহমেদসহ বোর্ড অব ট্রাস্টিদের আর্থিক অনিয়ম তদন্তের পাশাপাশি তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বোর্ড পুনর্গঠনের দাবি তোলা হয়েছে।
মানববন্ধনে আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সূফী সাগর সামস বলেন, ‘আইন ও সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের লিখিত অভিযোগ, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিদের বিরুদ্ধে জমে থাকা একগাদা অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে দুদক। এর অংশ হিসেবে এরই মধ্যে নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।’
এই কার্যক্রমে কালক্ষেপণ না করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান এম ইব্রাহিম পাটোয়ারি বলেন, ‘অভিযুক্তরা অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা অনেকটা প্রকাশ্যেই পেশির জোর দেখিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অবৈধ অর্থের জোরে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
‘এর আগে একাধিকবার ইউজিসির তদন্ত দল নর্থ সাউথের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কী এক অদৃশ্য খুঁটির জোরে নর্থ সাউথের দুর্নীতিবাজ ট্রাস্টিরা বারবার থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। নর্থ সাউথের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি,
জঙ্গিবাদের ভয়াল থাবা থেকে বাঁচাতে এবার যেন কোনোমতেই ছাড় দেয়া না হয়।’
তার অভিযোগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির হোতা আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের এমএ কাসেমের সঙ্গে তারেক রহমানের গোপন আঁতাত রয়েছে।
ওই সময় তারেক রহমানের সঙ্গে এমএ কাসেমের ঘনিষ্ঠতার বিভিন্ন স্থিরচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
মানববন্ধনে একাধিক বক্তা বলেন, নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রভাবশালী সদস্যরা যেন অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রমে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য অভিযুক্তদের সরিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞারও দাবি জানান তারা।
তাদের অভিযোগ, নর্থ সাউথের আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রয়েছে একগাদা অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভলপার্স কোম্পানি থেকে কমিশন নেয়া, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ির জন্য এক লাখ টাকা করে সিটিং এলাউন্স, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ এলাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে ফান্ডের কোটি কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েক গুণ শিক্ষার্থী ভর্তি, অতিরিক্ত বিভাগ খোলা, হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি নাফিস ইমতিয়াজকে আবার ভর্তি করে জঙ্গি আতঙ্ক তৈরি।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সূফী সাগর সামস, বাংলাদেশ সংবাদপত্র (গণমাধ্যম) কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার, বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান এম ইব্রাহিম পাটোয়ারি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফেভারেশনের সভাপতি বিদ্যুৎ বিশ্বাস, মানবাধিকারকর্মী এম ইদ্রিস, সাংবাদিক নেতা কালিমুল্লা ইকবালসহ আরও অনেকে।