মালয়েশিয়ায় যেতে কেউ যেন এখনই কারও সঙ্গে কোনো লেনদেন না করেন, এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমওইউ সই করেছি। এখনও মার্কেট খোলেনি। এমওইউর পরের প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে দু-এক দিনের মধ্যে একটা প্রস্তাব আসবে। এ শ্রমবাজার খোলা নিয়ে আমরা তিন বছর অপেক্ষা করেছি। আশা করি জানুয়ারি থেকে কর্মী যাওয়া শুরু হবে।
‘এটা খুব দুঃখজনক যে আর্থিক লেনদেনের কথা শুনছি। এখনও মার্কেট খোলে নাই। এমওইউ হয়েছে। গরিব মানুষের ওপর এখনই অত্যাচার। এটা ঠিক না। তাদেরকেও একটু সচেতন হতে অনুরোধ করব। দু-এক দিনের মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে।’
ইমরান আহমদ বলেন, ‘কর্মী যাবে বিএমইটির ডাটাবেজ থেকে। কীভাবে যাবে সেটা আমরা ঠিক করব। কর্মীরা ন্যূনতম খরচে সেখানে যেতে পারবেন। বাংলাদেশ প্রান্তে যে খরচ হবে, সেটা কর্মী বহন করবেন। আর সেই খরচ খুব কম হবে। মন্ত্রণালয় থেকে সেই খরচ নির্ধারণ করে একটা ধারণা দেয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ এবং বিমান টিকিট নিয়োগ কর্তা দেবে। আর বাংলাদেশ অংশে কর্মী খরচ বহন করবেন। আমরা ডাটাবেজের বাইরে কোনো কর্মী পাঠাব না। আমরা বিএমইটির তালিকা থেকে কর্মী পাঠাব।’
লিখিত বক্তব্যে সচিব জানান, এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবে। যেমন রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া, তাদের আবাসন, কর্মে নিয়োজিত করা এবং কর্মীর নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ বহন করবে। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবে।
মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিনসংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বিমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবে।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশ প্রান্তে কোনো ধরনের গ্রুপিং হতে দেয়া হবে না। কর্মী পাঠানো নিয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমওইউ সই হলেও এখনও অনেক আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে।
তাই মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা দেয়ার আগে মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুকদের যেকোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় ১ লাখ ৬০ বা ৬৫ যা-ই থাকুক না কেন, এখন এটা অনেক কমে আসবে। কারণ কর্মীর ব্যয়ের বেশির ভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবে।’
সচিব বলেন, ‘এখনও কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ে আলাপ বাকি আছে। সব সুরাহা হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হবে। সেই ঘোষণা মন্ত্রণালয় থেকেই দেয়া হবে। তার আগে দালালের মাধ্যমে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ করছি সবাইকে।’
৩ বছর বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। বাংলাদেশ থেকে সব পেশার শ্রমিক নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে দেশটি। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেবে মালয়েশিয়া।