বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ঋণ পাচ্ছেন না সব বিকাশ গ্রাহক

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৯:৩০

দেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ সেবা চালু হয় গত ১৫ ডিসেম্বর। এই ঋণ পেতে বিকাশ গ্রাহকদের কোথাও যেতে হচ্ছে না। তবে বিকাশের সব গ্রাহক এ ঋণ পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে গ্রাহকের কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে সিটি ব্যাংক।

সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ বেশ সাড়া ফেললেও বার বার চেষ্টা করেও এই ঋণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বিকাশের অনেক গ্রাহক। এর কারণ হিসেবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং বিকাশ বলছেন, বেঁধে দেয়া কিছু শর্তের জন্যই অনেকে এই ঋণ নিতে পারছেন না।

সেবাটি চালুর পাঁচ দিনে বিকাশের সাড়ে তিন হাজার গ্রাহককে ঋণ দিয়েছে সিটি ব্যাংক। বিতরণ করা ঋণের অঙ্ক এক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই ঋণ দেয়া হচ্ছে কেবল বিকাশ গ্রাহকদের।

দেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ সেবা চালু হয় গত ১৫ ডিসেম্বর। এই ঋণ পেতে বিকাশ গ্রাহকদের কোথাও যেতে হচ্ছে না। এমনকি কোনো নথিতে সইয়ের প্রয়োজন নেই, দিতে হচ্ছে না জামানত। সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসেই মোবাইল ফোনে এক ক্লিকে ঋণ পাচ্ছেন গ্রাহক।

তবে বিকাশের সব গ্রাহক এ ঋণ পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে গ্রাহকের কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে সিটি ব্যাংক।

যারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের বিকাশের অ্যাপে দেখানো হচ্ছে, ‘দুঃখিত... আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদানের নীতিমালা অনুযায়ী আপনার বিকাশ হিসাব এখনও ঋণসেবার জন্য উপযুক্ত নয়।’

আবেদন করে ব্যর্থ হয়ে এমন ম্যাসেজ পাওয়া বিকাশ গ্রাহক সারোয়ার প্রতীক ক্ষোভ জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই কিছু টাকার খুব প্রয়োজন হয়েছিল; ভাবলাম বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিই। কিন্তু আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছি।

‘তাহলে কারা এ ঋণ পাচ্ছেন বুঝতে পারছি না।’

জানা গেছে, ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে সিটি ব্যাংক আবেদন করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দেশনা দেয়। এতে বলা হয়, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে যারা বিকাশ গ্রাহক হয়েছেন, তারাই শুধু ঋণ পাবেন।

তবে বিকাশের প্রচুর গ্রাহক এখনও ই-কেওয়াইসি নিবন্ধনের আওতায় আসেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিকাশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে কেওয়াইসিতে যারা গ্রাহক হয়েছেন, তাদের ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে পুনরায় নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিকাশ। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে আরও অনেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন।’

অন্যদিকে সিটি ব্যাংক কর্মকতারা বলছেন, ঋণ পেতে গ্রাহককে দীর্ঘদিন বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। বিকাশের লেনদেন পর্যালোচনা করে কারা ঋণ পাবেন সেটি নির্ধারণ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। তাই গ্রাহক যত বেশি বিকাশে লেনদেন করবেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ততই তারা অগ্রাধিকার পাবেন।

সিটি ব্যাংকের জনসংযোগ ও গণমাধ্যমপ্রধান মির্জা গোলাম ইয়াহিয়া সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুর ১২টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে সেবাটি। ১৯ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ৮৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা ৩৯৯ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণ পেয়েছেন মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ৩ হাজার ২৩২ গ্রাহক। গড় ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৬৫৫ টাকা।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার দুপুরে এই সেবা চালু হবার পরের তিন দিন (বিজয় দিবস এবং শুক্র ও শনিবার) ছুটি ছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন, ছুটির মধ্যে হয়তো ঋণ সেবা বন্ধ থাকবে। তাই, ওই তিন দিন কম সংখ্যক বিকাশ গ্রাহক আবেদন করেছিলেন।

‘তবে রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনে প্রচুর গ্রাহক আবেদন করেছেন। ঋণও দেয়া হয়েছে ছুটির দিনের চেয়ে বেশি।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮৬ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল; পেয়েছিলেন ৩ হাজার ২৩২ জন গ্রাহক। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ঋণের পরিমাণ ১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আর ঋণগ্রহীতার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার অতিক্রম করেছে।’

বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ করে (ই-কেওয়াইসি) যেসব গ্রাহক বিকাশ হিসাব খুলেছেন, শুরুতে তারাই ডিজিটাল ঋণ পাচ্ছেন। এর পাশাপাশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে নিয়মিত লেনদেনকারীদের।

নানা মানদণ্ড বিবেচনায় যোগ্য গ্রাহকদের ৯ শতাংশ সুদে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। এর মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন মাস। তিনটি মাসিক কিস্তিতে বিকাশ অ্যাপ থেকেই ঋণ পরিশোধ করা যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন সেবা চালু থাকলেও এত দিন ঋণ নেয়ার সুযোগ ছিল না। বছরজুড়ে পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ করার পর প্রথমবারের মতো দেশে জামানতহীন ইনস্ট্যান্ট ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ’ নামের সেবাটি চালু করে সিটি ব্যাংক।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই সেবার উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের ও সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই ঋণে দৈনিক হারে সুদহার নির্ধারিত হবে। একজন গ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাকে কেবল সেই কদিনের সুদ দিতে হবে। অগ্রিম নিষ্পত্তির জন্য বাড়তি খরচ দিতে হবে না।

এ বিভাগের আরো খবর