বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জরায়ু কর্তনকারী সেই ডাক্তাররা যা বলছেন

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:৫২

রোগী বা রিপোর্ট না দেখেই জরায়ু অপারেশনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের সহকারি রেজিস্ট্রার ডা. কবিরুল ইসলাম কবির বলেন, ‘দেখা যায়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সব করা আছে; ‌আমাকে জানানোও আছে। তবে সত্যি বলতে কী, অনেক সময় রিপোর্ট খেয়াল করা হয় না যে, এই রোগীর কী জন্য অপারেশন করা হবে।’

সঠিক প্রটোকল না মেনেই উপকূলবাসী নারীদের হিস্টেরেক্টমি তথা জরায়ু অপসারণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন এসব অপারেশনের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন চিকিৎসক।

সুন্দরবন অ্যাপোলা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ শ্যামনগরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার করেন সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. সুজিত রায়। তিনি গত ২৭ অক্টোবর প্রথমে বলেন, ‘হিস্টেরেক্টমি অনেক কষ্টদায়ক অপারেশন এবং সময়ও লাগে বেশি। তাই আমি প্রোপার ইন্ডিকেশন থাকলেই কেবল কিছু রোগীর এ ধরনের অপারেশন করে দিই; তবে স্বল্প সংখ্যক।’

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অপারেশন করার অভিযোগ তুললে ডা. সুজিত এরপর বলেন, ‘আসলে এখানে পরীক্ষার অপ্রতুলতা রয়েছে। যেমন, টিভিএস পরীক্ষা শ্যামনগরে হয় না। সাতক্ষীরা জেলা শহরে সম্প্রতি হচ্ছে। এই টেস্ট করাতে রোগীকে খুলনায় পাঠাতে হতো।

‘পিআইডি কোনো ডায়াগনসিস না। এটা একটা রোগের নাম। বাল্কি ইউটেরাস বলা আছে, সেগুলো অতবেশি অথেনটিক ডায়াগসিস না। কিন্তু কিছু কিছু রোগী আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিল, তাদের দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হচ্ছিল। এমন ক্ষেত্রে অপারেশন করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রভাষক ডা. আনিছুর রহমান দাবি করেন, ‘জরায়ুতে টিউমারসহ নানা ধরনের জটিলতা থাকলেই কেবল অপারেশন করা হয়। যাদের চিকিৎসা বারবার ব্যর্থ হয়, তাদেরই অপারেশন করা হয়। ক্লিনিক মালিক বললেই অপারেশন করা হয় না।’

অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে টিভিএস বা ভিআইএ পরীক্ষার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তুললে ডা. আনিছুর বলেন, ‘যদি কোনো রোগীর টিউমার থাকে, তাহলে আলট্রাসনোতেই বোঝা যায়। এর আবার ভিআইএ টেস্ট কী করাবেন?’

৩২ বছরের রোগীর জরায়ু কেটে ফেলার যুক্তি কী- প্রশ্ন করলে এই চিকিৎসক বলেন, ‘পরিবার কমপ্লিট থাকলে কোনো অসিুবিধা নাই। এতে রোগীর শুধু মাসিক বন্ধ হয়। তাছাড়া আমরা ওভারি রেখে দিই, যাতে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ঠিক থাকে।’

রোগী বা রিপোর্ট না দেখেই জরায়ু অপারেশনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. কবিরুল ইসলাম কবির বলেন, ‘দেখা যায়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সব করা আছে; ‌আমাকে জানানোও আছে। তবে সত্যি বলতে কী, অনেক সময় রিপোর্ট খেয়াল করা হয় না যে, এই রোগীর কী জন্য অপারেশন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘রোগীরা মূলত গ্রাম্য ডাক্তারদের মাধ্যমে ডেভিয়েটেড (বিপথগামী) হয়ে আসেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখি, রোগীরা কোনো না কোনো ডাক্তারকে দেখিয়ে অপারেশনের পরামর্শ নিয়ে আসেন। তবে যে রোগীদের দেখার (চিকিৎসা দেয়ার পরে) পরে অপারেশন করি, তাদের আসলে অনেক চেষ্টা করার পরে শেষ পর্যায়ে গিয়ে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিই।’

কিছু দায় ক্লিনিকিগুলোর উপর চাপিয়ে ডা. কবির বলেন, ‘আমরা আসলে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে যাই। দেখা যায়, অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে দেয়ার পরে অনেক সময় রিপোর্ট দেখা হয় না, মিস হয়ে যায়। ওদের (ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের) কাছে শোনা হয় সবকিছু কমপ্লিট আছে কি না। হয়তো মেয়েটার অল্প বয়স, আমি খোয়াল করিনি। আবার অনেকের বয়স বোঝাও যায় না। ফলে এমন রোগীর জরায়ু অপারেশনও হয়ে যায়।’

এ বিভাগের আরো খবর