বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নর্থ সাউথের সব নথি চায় দুদক

  •    
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:২১

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী স্বজনদের চাকরি দেয়ার নামে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল বাড়ির ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নেয়ার আড়ালে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এসব নথি তলব করা হয়েছে।

দেশের শীর্ষ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টির সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে সব নথি চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতি তদন্তে সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করেছে দুদক।

তদন্ত দলের সদস্যরা হলেন উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ফয়সাল এবং সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালক (২) সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদন্তের তদারকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী স্বজনদের চাকরি দেয়ার নামে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল বাড়ির ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নেয়ার আড়ালে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এসব নথি তলব করা হয়েছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্রে যাবতীয় অনুলিপি চাওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর পাঠানো চিঠিতে চাহিদা রেকর্ডপত্রের মধ্যে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ২০১০ থেকে এখন পর্যন্ত জমি ক্রয় সংক্রান্ত চাহিদাপত্র, অনুমোদিত বাৎসরিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রাক্কলন, রেজুলেশন, নোটশিট, প্রশাসনিক অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন দলিল, উল্লিখিত জমি ক্রয়ের বিপরীতে বরাদ্দ করা ব্যাংক চেক এবং পে অর্ডারের কপি।

দুদকের চাহিদায় আরও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ২০১২ থেকে এখন পর্যন্ত গাড়ি বা মোটরযান ক্রয় সংক্রান্ত চাহিদাপত্র, অনুমোদিত বাৎসরিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রাক্কলন, রেজুলেশন, নোটশিট, প্রশাসনিক অনুমোদন, উল্লিখিত গাড়ি ও মোটরযান ক্রয়ের বিপরীতে বরাদ্দ করা ব্যাংক চেক, পে অর্ডারের কপি, রেজিস্ট্রেশন এবং শুল্কায়ন সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের কপি।

এছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে অনুমোদিত ব্যাংক হিসাবের তালিকাসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার ছায়ালিপি, ক্রয় নীতিমালা ছায়ালিপি, সিন্ডিকেট, বিভিন্ন কমিটির সিটিং অ্যালাউন্স দেয়ার নীতিমালার নথি, ২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং বিভিন্ন কমিটির সিটিং অ্যালাউন্স বরাদ্দ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের কপি চেয়েছে দুদক।

চাহিদা করা এসব নথি অতি জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে বলেছে দুদক।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এম এ কাসেম সিন্ডিকেটের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানিয়েছিল আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন।

ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ‘আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম সিন্ডিকেট’ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি লুটেপুটে খাচ্ছেন। এই সিন্ডিকেটের কারণে নর্থ সাউথে অনিয়ম পরিণত হয়েছে নিয়মে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন নেয়া, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি ইত্যাদি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জমা পড়েছে।

এসব অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনও হয়েছে।

১৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এত বেশি অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানও ক্রমেই নিম্নমুখী।’

ওই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এমএ কাশেম সিন্ডিকেটের হাতে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই জিম্মি হয়ে আছে। এ দুজন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেনজির আহমেদ, রেহেনা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আজিজ আল কায়সার টিটো এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন সুফী সাগর সামস।

তার দাবি, আজিম-কাশেম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অমান্য করে আটটি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং অ্যালাউন্স আদায় করেন। এসব কমিটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে রেখেছেন তারা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ-অবৈধ সব কমিটিতেই আজিম বা কাশেম নিয়ম বহির্ভূতভাবে সদস্য হন।

পরে ২৬ অক্টোবর এক মানববন্ধনেও আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর