বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাদী ‘ক্ষতিগ্রস্ত নন’, মুরাদের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা খারিজ

  •    
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৯:১৯

মামলার পক্ষে শুনানি করা মাসুদ আহমেদ তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিচারক বলেছেন, যিনি বাদী, তিনি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তাই মামলাটি খারিজ করে দেয়া হয়েছে। তবে আমি বলতে চাই, বিজ্ঞ বিচারক আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মামলাটি খারিজ করেছেন। এটি ঠিক হয়নি।’

পদত্যাগ করা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা বিএনপির পক্ষ থেকে মামলার আবেদন ফিরিয়ে দিল আদালত। তুমুল সমালোচিত সেই বক্তব্যে মামলার বাদী নিজে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হননি, এমন কারণ দেখিয়ে এ আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের অভিযোগে মুরাদ ছাড়াও অনলাইনে তার সাক্ষাৎকার গ্রহীতা মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদনটি করা হয়েছিল।

আবেদনের এক দিন পর সোমবার বিকেলে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন ‘মামলা গ্রহণ করার মতো উপাদান না থাকার’ কথা জানিয়ে সেটি খারিজ করে দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া খারিজের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।

রোববার বিএনপির সিদ্ধান্তে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ওমর ফারুক মামলার আবেদন জমা দেন। তবে বিচারক না থাকায় সেদিন শুনানি হয়নি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে নানা সময় দাবি জানানো বিএনপির এই আইনেই মামলা করা নিয়েও আলোচনা তৈরি হয়েছে।

সেই আবেদনে শুনানি করেন বিএনপির আইনজীবী নেতা মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘ডা. মুরাদ হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, একজন চলচ্চিত্র নায়িকার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন।

‘এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি এবং বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিভিন্ন ফেসবুক, ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে।

‘ডা. মুরাদ হাসানের এই বক্তব্যের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি একটি দেশের সরকারের সাংবিধানিক পদে থেকে এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ সংঘটিত করেছেন।’

পরে বাদী ওমর ফারুকের জবানবন্দি দেন বিচারক। জানান, আদেশ পরে দেবেন।

এরপর বিকেলে মামলার আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়।

ওমর নিউজবাংলাকে জানান, বিচারক তাকে প্রশ্ন রাখেন, ‘মুরাদ বক্তব্য রেখেছেন, আপনি কেন মামলা করতে চান।’

তিনি বিচারককে বলেন, ‘আমরা এই রাজনৈতিক আদর্শে সমর্থন করি। আর এটা তো শুধু জাইমা না, পুরো নারী সমাজের প্রতিই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য। সেই প্রেক্ষিতে তো যে কেউ মামলা করতে পারে।’

পরে একটি টেলিভিশনে টকশোতে নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের আপত্তিকর বক্তব্যের পর তার বিরুদ্ধে মামলার উদাহরণ টানেন ওমর ফারুক। বলেন, ‘সেই মামলা তো আপনারা নিয়েছেন।’

‘কিন্তু জজ সাহেব আমাদের কথা শোনেননি, তিনি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন’- বলেন ওমর ফারুক।

মাসুদ আহমেদ তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিচারক বলেছেন, যিনি বাদী, তিনি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তাই মামলাটি খারিজ করে দেয়া হয়েছে। তবে আমি বলতে চাই, বিজ্ঞ বিচারক আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মামলাটি খারিজ করেছেন। এটি ঠিক হয়নি।‘

সকালে রাজশাহীর একটি আদালতও মুরাদের বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দেয়। সেই আদালতের বিচারকও বলেছেন, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা যিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তিনি আদালতে আসেননি। দ্বিতীয়ত. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা আবেদনে বলা হলেও সে ক্ষেত্রে থানায় যেতে হবে। তৃতীয়ত. একই ঘটনায় সারা দেশে মামলা হতে পারে না।

ওমর ফারুকের মামলার আবেদনে বলা হয়, মুরাদ হাসান বর্তমান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং নাহিদ একজন মিডিয়া উপস্থাপক। গত ১ ডিসেম্বর আসামি মুরাদ হাসানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন নাহিদ, যা পরে মুরাদ হাসান তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে প্রচার করেন।

সেই সাক্ষাৎকারে জিয়া পরিবার এবং জাইমা রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, মিথ্যাচার, নারীবিদ্বেষী, মানহানিকর, অশ্লীল মন্তব্য করেন বলে উল্লেখ করা হয় আবেদনে।

ওমর ফারুক বলেন, আসামিদের এমন কর্মকাণ্ড ফেসবুকের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, যা সর্বমহলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আসামিদের এই ধরনের কাজ জিয়া পরিবার ও জাইমা রহমানসহ সমগ্র নারী সমাজের জন্য মানহানিকর ও অপমানজনক। এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। তাই এ অপরাধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/৩১/৩৫ ধারায় শাস্তিযোগ্য হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা প্রয়োজন।

এ বিভাগের আরো খবর