দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমে খালি হাতে ঘরে ফিরতে বাধ্য হওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আশা করছেন তারা একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেন। সেই আন্দোলনে সরকারকে বাধ্য করবেন তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর অনুমতি দিতে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এসব কথা।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ নামে একটি সংগঠন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৩ সালে আর সরকার পতনের দাবিতে ২০১৫ সালের আন্দোলনে নেমে ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপি আর কখনও বড় কর্মসূচিতে যায়নি। এমনকি ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারও করা হয়নি।
এরপর গত প্রায় সাত বছরে বিএনপি নেতারা নানা সময় আন্দোলনের কথা বলেছেন। গত বছর করোনা সংক্রমণের আগেও সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এখন আবার সেই ধরনের কথা বলছেন নেতারা।
ফখরুলের বিশ্বাস, দুই দফা ব্যর্থ হলেও এবার তারা সফল হবেন। তিনি বলেন, ‘আর বিলম্ব নয়, জনগণ বেরিয়ে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ আরও বেশি বেরিয়ে আসবে। এর মধ্য দিয়ে নিঃসন্দেহে আমরা একটি আন্দোলন করতে পারব। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারকে বাধ্য করতে পারব বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন নয়, আন্দোলন হবে জাতির মুক্তির জন্যও। আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আর সেই কারণে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি করে একটি দুর্বার আন্দোলন গড়তে হবে। যার মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ ও দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে পারব। তাদেরকে আমরা বাধ্য করব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তার চিকিৎসা ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে।’
খালেদা জিয়াকে ‘অবিসংবাদিত নেতা’ আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘৭১ থেকে দেশের মানুষের প্রতি যে দায়িত্ব, সে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন।’
বিএনপি নেত্রীকে বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আটক করে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন দলটির মহাসচিব। বলেন, ‘এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চক্রান্তের অংশ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। কিন্তু সরকার বিদেশে যেতে দিতে চায় না। এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া, সহতথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমও বক্তৃতা করেন।