উত্তরার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মানোয়ার হোসেন। পরিবার নিয়ে থাকেন টঙ্গীর মরকুন এলাকায়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য টঙ্গী বাজার এলাকায় বলাকা পরিবহনের একটি বাসে উঠেছিলেন। ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠার পর পকেটে হাত দিতেই টের পান তার মোবাইল ফোনটি নেই। এক সহযাত্রীর মোবাইল থেকে নিজের ফোনে কল দেন তিনি। দুইবার রিং হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় সেটি। ওইদিন সন্ধ্যায় টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মানোয়ার হোসেন।
এ ঘটনার প্রায় ১১ মাস পর গত বৃহস্পতিবার থানা থেকে ফোন আসে মানোয়ারের কাছে। ডাকা হয় টঙ্গী পূর্ব থানায়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ এদিন বিকেলে তার হাতে তোলে দেন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি।
আপ্লুত মানোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হারানো মোবাইল ফেরত পাওয়া যায় ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য। আমার মোবাইলটি দিয়ে যেন কোনো অপরাধ সংগঠিত না হয় সে জন্য থানায় জিডি করেছিলাম। প্রায় ১১ মাস পর পুলিশ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে দিয়েছে। সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
মানোয়ারের মতো হারানো মোবাইল ফেরত নিতে এসেছেন টঙ্গীর ক্রিস্টাল কলেজের শিক্ষক সায়েমাতুন নুসাইবা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গত জুনে বাসা থেকে মোবাইল ফোনটি চুরি হয়। থানায় জিডি করেছিলাম। প্রায় ছয় মাস পর চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন ফেরত পেয়ে সত্যিই আনন্দিত। পুলিশের প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে, জনগণ সেবা পাচ্ছে... এটা তারই প্রমাণ।’
মানোয়ার, সায়েমাতুনের মতো আরও ২০জন ফেরত পেয়েছেন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরের পক্ষে মোবাইল ফোনগুলো প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেন উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ।
ইলতুৎমিশ বলেন, ‘হারানো বা খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার হয় না এমন একটা ভ্রান্ত ধারণা জন্মেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আমরা সেই ধারণা পাল্টে দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ৩০০টি ফোন হারানো বা খোয়া যাওয়ার জিডি হয়। আমরা পুলিশ কমিশনার খন্দকার লূৎফুল কবির স্যারের নির্দেশে আলাদা একটি ইউনিট করেছি। তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইলগুলো উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিচ্ছি।’
যারা মোবাইল ফোন হারানোর পর থানায় জিডি করতে অনীহা প্রকাশ করেন তাদের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘হারানো বা খোয়া যাওয়া মোবাইল দিয়ে অনেক অপরাধ সংগঠিত হয়। তাই মোবাইল ফোন হারানো গেলে নিকটস্থ থানায় সঠিক তথ্যসহ জিডি করার অনুরোধ রইল।’