বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৭ বছর পর বরগুনা যুবলীগের সম্মেলন, পদপ্রত্যার্শীদের দৌড়ঝাঁপ

  •    
  • ১১ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:১৯

২০০৫ সালে সর্বশেষ জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আইনজীবী কামরুল আসহান মহারাজ সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এত বছর পর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

১৭ বছর পর আগামী ২১ ডিসেম্বর হতে যাওয়া বরগুনা জেলা আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণে বরগুনা সফর করছেন। বৈঠক করেছে জেলা যুবলীগ। পদপ্রত্যাশী নেতারা শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। শহরজুড়ে শুভেচ্ছা পোস্টার টানিয়েছেন তারা।

জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এবং শনিবার শহর ঘুরে এসব তথ্য মিলেছে।

২০০৫ সালে সর্বশেষ জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আইনজীবী কামরুল আসহান মহারাজ সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই কমিটি ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করে। এত বছর পর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর বরগুনার বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ২৬ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জেলা যুবলীগে পদপ্রত্যাশীদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়। চার দিনে কেন্দ্রে ২৪০ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন।

এরপর ১ ডিসেম্বর বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২১ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ জানানো হয় এবং এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।

সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরই শীর্ষ দুই পদের জন্য নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। কেন্দ্রে লবিং,সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিশালাকৃতির ব্যানার, ফেস্টুন টানাতে শুরু করেন তারা।

জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কমিটির শীর্ষ দুই পদপ্রত্যাশীর অনেকেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন সভাপতি পদপ্রত্যাশী বর্তমান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, সহসভাপতি রেজাউল করিম এ্যাটম ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

এদের মধ্যে সাহাবুদ্দিন সাবু ছাত্রজীবনে কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগের পদে ছিলেন। এরপর তিনি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। ২০০৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই কমিটির তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর অনেক বছরেও জেলা যুবলীগের কমিটি না হওয়া কার্যত তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। রেজাউল কবির এ্যাটম ২০০৫ সালের কমিটিতে জেলা যুবলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি পদপ্রত্যাশী জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাবু বলেন, ‘আমার পেশাই রাজনীতি। এর বাইরে আমার আলাদা কোনো পেশা নেই। দীর্ঘ বছর দলের পক্ষে লড়তে গিয়ে মামলা-হামলার শিকার হয়ে জেল ও ওয়ান-ইলেভেনের সেনা শাসকদের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘যুবলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। আমি যেভাবে গত দিনগুলোয় নেতৃত্ব দিয়েছি, আশা করি নতুন কমিটিতে যুবলীগ আমাকে মূল্যায়ন করবে।’

জেলা যুবলীগে সভাপতি পদের আরেক প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষে যুব রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অপেক্ষায় দীর্ঘ বছর কেটেছে। সম্মেলনে আমি যোগ্য পদ পাব বলে আশা রাখি।’

রেজাউল করিম এ্যাটম বলেন, ‘আমি দায়িত্ব চাই। পদ পেলে ঝিমিয়ে পড়া জেলা যুবলীগকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাব।’

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুল আজাদ রিপন, বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরিষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমাম হাসান শিপন, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন মোল্লা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুনাইদ জুয়েল, সাবেক ছাত্রনেতা শাওন তালুকদার, মাহমুদুল বারী রনি, রানা তালুকদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন রাসেল, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান রকিব, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি যুবায়ের আদনান অনিকসহ আরও অনেকে।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ইমরান হোসেন রাসেল জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার মেয়ে বিয়ে করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ও ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি যুবায়ের আদনান অনিক বলেন, ‘দীর্ঘ বছর নেতৃত্বে থেকে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেছি। এখন যুব রাজীনিততে নিজেকে যুক্ত করে এ ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করে যেতে চাই।’

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকতারুজ্জামান রকিব বলেন, ‘চার বছর জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলাম। এরপর দলীয় প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সক্রিয় থেকে রাজনীতিতে যুক্ত আছি। দায়িত্ব পেলে যুবলীগকে জেলায় আরও সংগঠিত করব।’

সাবেক ছাত্রনেতা শাওন তালুকদার বলেন, ‘২০১০ সালে জেলা ছাত্রলীগের তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করার পর ওই কমিটি দিয়ে পাঁচ বছর চলে গেছে। ওই সময় আমরা পদবঞ্চিত হয়েও হাল ছাড়িনি। দলের জন্য নিরন্তর কাজ করে আসছি।’

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জুনাইদ জুয়েল বলেন, ‘ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব নিতে চাই। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব দিলে জাতির জনক শেখ মুজিবের আদর্শ বাস্তবায়ন করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাব।’

জেলা আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান সভাপতি ও পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ ও পরামর্শে আওয়ামী যুবলীগের বরগুনা জেলা শাখার সম্মেলন ঘিরে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। যুবলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। আমি দীর্ঘ বছর এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছি। আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুবলীগ। আমি চাই এই সংগঠনে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তারাও একইভাবে সংগঠনকে ভালোবেসে এর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনীতি করবেন। ’

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘যুবলীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। এখানে লবিং বা তদবির কোনো কাজে আসে না। যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতা নির্বাচিত করা হবে। হাইব্রিড ও বিতর্কিতদের এই দল করার কোনো সুযোগ নেই। ত্যাগী, যোগ্য ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন নেতৃত্বই আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর