ঈদের ছুটিকে ঘিরে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। পাহাড়, হ্রদ আর ঝরনার টানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। ঈদের ছুটির চতুর্থ দিনেও পর্যটন শহর হিসেবে খ্যাত রাঙামাটি ও কাপ্তাইয়ের জনপ্রিয় বিনোদন স্পটগুলোতে শত শত পর্যটকের সমাগম ঘটেছে।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাঙামাটির পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো, কাপ্তাই হ্রদ, পর্যটন ঝুলন্ত সেতু, আসামবস্তি কাপ্তাই সড়ক এবং শুভলং ঝরনায় পর্যটকদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝরনা ও নিসর্গ রিভার ভ্যালিসহ পর্যটন স্পটগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। হোটেল-মোটেলেও ৭০-৮০% বুকিং আছে।
রাঙামাটি হোটেল কসমস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে আমাদের হোটেলে আগামী শনিবার পর্যন্ত রুম পুরোপুরি বুকিং আছে।
হেটেল হিল অ্যাম্বাসেডর এর রায়হান বলেন, আমাদের হোটেলে প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ রুম বুকিং আছে আগামী কয়েকদিন।
রাঙামাটি পলওয়েল পার্কে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো বল পার্ক এলাকারজুড়ে শতশত পর্যটকদের ভীড় লক্ষ্য করা যায়। পলওয়েল পার্কের টুরিস্টরা ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেকে ভ্রমণ ও পলওয়েল পার্কের বিভিন্ন স্পটগুলোতে পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।
পলওয়েল পার্কে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা নিখিল দাশ দম্পতি বলেন, এখানকার কাপ্তাই লেক ও পলওয়েল পার্ক খুবই সুন্দর। আমরা এখানকার প্রাকৃতিক রুপ দেখে খুবই বিমোহিত।
এদিকে, কাপ্তাই শিলছড়ি নিসর্গ রিভার ভ্যালি এন্ড পড হাউসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অসংখ্য পর্যটকের উপস্থিতি। চট্টগ্রামের সিটি গেইট এলাকা থেকে আসা পর্যটক আলাউদ্দিন ও টিপু বলেন, ‘কাপ্তাইয়ে আমরা বন্ধুরা ঘুরতে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। আমরা বোট রাইডিং করেছি, অসাধারণ প্রকৃতি।’
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা এলাকা থেকে আসা জাহাঙ্গীর, নাছির, ফারুক সিকদার ও তৌহিদ জানান, ‘কাপ্তাই আমাদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। পরিবেশ দারুণ। পর্যটন শিল্পে কাপ্তাইয়ে প্রচুর উন্নতি হয়েছে।’
নিসর্গ রিভার ভ্যালি এন্ড পড হাউসের পরিচালক মো. আফসার উদ্দিন জানান, ‘ঈদের টানা ছুটিতে আমাদের বিনোদন কেন্দ্রে প্রচুর পর্যটক এসেছে। আমাদের ১৭টি কটেজ ঈদের দিন থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত পুরোপুরি বুকিং। পাশাপাশি, আমাদের নিসর্গ রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে দেড় থেকে দুই শতাধিক মানুষ খাবার উপভোগ করছেন।’
এদিকে, কাপ্তাই নৌবাহিনীর শহীদ মোয়াজ্জেম ঘাঁটি পরিচালিত লেক প্যারাডাইসে গিয়েও দেখা গেছে পর্যটকের ভিড়। কাপ্তাই লেকের এক বোট চালক মো. জাহাঙ্গীর জানান, ‘এখানে প্রচুর পর্যটক এসেছে। অনেকে বোট নিয়ে কাপ্তাই লেক ঘুরছেন।’
এছাড়া কাপ্তাই ৪১ বিজিবি পরিচালিত ওয়াগ্গা প্যানোরোমা জুম রেস্তোরাঁ, কাপ্তাই রিভার ভিউ পার্ক, সেনাবাহিনী পরিচালিত জীবতলি লেকশোর ও লেকভিউ আইল্যান্ড, ফ্লোটিং প্যারাডাইস, বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে পরিবার-পরিজন এবং বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অসংখ্য পর্যটক ঈদের ছুটি উপভোগ করছেন।
চট্টগ্রামের পর্যটক সাবরিনা সুলতানা জানান, শিলছড়ি নিসর্গ রিভার ভ্যালি আর কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এখানকার পরিবেশও বেশ পরিচ্ছন্ন। খুব ভালো সময় কাটাচ্ছি।’
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, আজকে রাঙামাটি পর্যটনের ঝুলন্ত সেতুতে প্রচুর পর্যটক ভ্রমণ করছেন। মোটেলেও আাগামী ১৩ জুন পর্যন্ত রুম বুকিং আছে। এই ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে প্রচুর টুরিস্ট ভ্রমণ করছেন।