বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিভিন্ন পেশার আড়ালে দুর্ধর্ষ চুরির অভিযোগ

  •    
  • ১১ ডিসেম্বর, ২০২১ ২০:৫৪

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চুরির ঘটনাটি প্রবাসে থাকা বাড়ির মালিক সিসি ক্যামেরায় দেখতে পান। পরে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হলে আলোড়ন তৈরি হয়। ওই ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

কেউ মিস্ত্রি, কেউ ফল বিক্রেতা, কেউ অটোরিকশাচালক। দিনে তাদের পেশা ভিন্ন হলেও রাতে একজোট তারা। একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্রে জড়িয়ে দিনে পেশার ফাঁকে রেকি আর রাতে পরিকল্পিতভাবে দুর্ষর্ধ সব চুরিতে জড়ান।

এমন অভিযোগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এবং ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২।

বাহিনীটি জানিয়েছে, চোরচক্রটির সদস্য সংখ্যা ছয়-সাত জন। ধানমন্ডির একটি ফাঁকা বাসায় ৬ ডিসেম্বর রাতে চুরির পরিকল্পনা করে তারা। এ জন্য ভাড়া করা মেসে পরিকল্পনা করতে একত্রিত হয় চোরচক্রের পাঁচ সদস্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ ডিসেম্বর রাতে ওই বাসায় চুরি করে তারা।

গ্রেপ্তারের সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও চোরাই মালামালও উদ্ধার করেছে র‍্যাব।

শনিবার বেলা ৩টায় কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘৭ ডিসেম্বর রাতে ধানমন্ডির একটি বাসার জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে ঢুকে চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় চোর দলের সদস্যরা বাসার ভেতরে আলমারি, ওয়্যারড্রব ইত্যাদি ভাঙচুর করে। তারা প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।’

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চুরির ঘটনাটি প্রবাসে থাকা বাড়ির মালিক সিসি ক্যামেরায় দেখতে পান। পরে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হলে আলোড়ন তৈরি হয়। ওই ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর এলাকাকেন্দ্রিক একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। এদের সদস্য সংখ্যা ছয়-সাতজন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তাররা সবাই বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ করে আসছিল। চোরচক্রটির একজন সদস্য অটোরিকশাচালক। তিনি অটোরিকশা চালানোর আড়ালে আড়ালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফাঁকা বাসাবাড়ি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের খোঁজখবর নেয়।

‘৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডি এলাকায় ফাঁকা বাড়ির সন্ধান পায় ওই অটোরিকশা চালক। বিষয়টি সে চক্রের হোতা নাসিরকে জানায। নাসির তার ভাড়া মেসে পাঁচজন চক্রের সদস্যদের নিয়ে পরিকল্পনা করার জন্য একত্রিত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি ভ্যান নিয়ে চুরির উদ্দেশ্যে ধানমন্ডির ওই বাসায় যায়।’

যেভাবে চুরি ধানমন্ডির বাসায়

গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং আবাহনী মাঠের পাশের এলাকায় চারজনকে নামিয়ে দিয়ে ভ্যানচালক অপেক্ষা করতে থাকে। বাড়ির নিচে একজনকে পাহারায় রেখে তিনজন পাঁচতলা বাড়ির তৃতীয় তলায় সানশেড বেয়ে ওপরে উঠে এবং জানালার গ্রিল কাটে। এরপর নাসির এবং ফরহাদ ভেতরে ঢোকে।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তাররা বাসার ভেতরে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা দেখতে পেয়ে সেটি কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখে। মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রীর খোঁজে বাসার আলমারি এবং ওয়্যারড্রবের ড্রয়ার ভেঙে একটি গলার হার, পাঁচটি কানের দুল, এক জোড়া চুড়ি এবং টাকা চুরি করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা র‌্যাবকে জানিয়েছে, চুরির ঘটনার পরদিন সকালে তারা চুরির স্বর্ণালংকার নিয়ে গ্রেপ্তার আজাদের স্বর্ণের দোকানে যায় এবং ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পরে সেই টাকা নাসির, ফরহাদ, সেলিমসহ দলের আরও দুজন নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। গ্রেপ্তার আজাদ স্বর্ণালংকারগুলো কেনার সঙ্গে সঙ্গে গলিয়ে ফেলেন।

গ্রেপ্তারদের পেশা

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার নাসির পেশায় একজন স্যানিটারি মিস্ত্রি। সে পাঁচ-ছয় বছর ধরে পেশার আড়ালে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ে। ধানমন্ডির বাসায় চুরির ঘটনায় গ্রিল কাটার পর সর্বপ্রথম সে বাসার ভেতর ঢোকে। তার নামে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ফরহাদ পেশায় একজন ফল বিক্রেতা। সে এই চোরচক্রের অন্যতম একজন সদস্য। ধানমন্ডির বাসায় চুরির ঘটনায় তাকে বাসার ভেতর টর্চলাইট দিয়ে আলো ফেলতে এবং গ্রিল কাটতে দেখা যায়। এর আগেও ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

বাহিনীটি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সেলিম পেশায় সবজি বিক্রেতা। সেও চক্রটির একজন নিয়মিত সদস্য। ধানমন্ডির বাসায় চুরির ঘটনায় তিনি সানশেডে অবস্থান নিয়ে গ্রিল কাটতে সহায়তা করে।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আজাদ একজন স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী। বছিলায় তার একটি নিজের স্বর্ণের দোকান রয়েছে। সে ব্যবসার পাশাপাশি চোরাই স্বর্ণালংকার কেনাবেচায় জড়িত। এর আগেও চুরি ও ছিনতাই করা স্বর্ণাললংকার কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করেছে সে।

এ বিভাগের আরো খবর