ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে তিন দিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন জেলায় নষ্ট হয়েছে ইটভাটার কাঁচা ইট। কুমিল্লা ও মেহেরপুরের ইটভাটা মালিকদের দাবি, তাদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে।
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জনতা ব্রিকসের ভাটার শ্রমিকরা জানান, বৃষ্টি থামার পর দুদিন ধরে তারা নষ্ট হয়ে যাওয়া ইটগুলো সরিয়েছেন।
এই ইটভাটার মালিক মাসুদ করিম মোহন বলেন, ‘অক্টোবরে ইটভাটায় কাজ শুরু করি। মাত্র ভাটা গুছিয়ে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ শুরু করেছি। ঠিক সেই মুহূর্তে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৯ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এতে অন্তত ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ‘যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ইটভাটা প্রস্তুত করতে আরও সপ্তাহ দশ দিন প্রয়োজন। এতে একদিকে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে, অন্যদিকে সময়ও নষ্ট হবে।’
ভাটা মালিক সমিতির হিসাবে, ক্ষতি বেশি হয়েছে মুরাদনগর, হোমনা, দাউদকান্দি, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ইটভাটাগুলোয়। এসব এলাকার ভাটা মালিকরা বলছেন, বৃষ্টিতে ৯৫ শতাংশ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বিএলবি ইটভাটার মালিক তাহমিদা ইসলাম জানান, তার ভাটার দুই লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি এমরানুর রহমান ভূইয়া জানান, তার মালিকানাধীন ৯ ইটভাটায় ৫০-৬০ লাখ কাঁচা ইট ইট নষ্ট হয়েছে। লোকসান হয়েছে অন্তত ৮০ লাখ টাকার।
এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘জেলায় প্রায় তিন শ ইটভাটা আছে। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে এসব ভাটায় শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ভাটার মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’
মেহেরপুরের প্রায় ১০০ ইটভাটায় বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে দেড় কোটি টাকার কাঁচা ইট, জানিয়েছে জেলার ইটভাটা মালিক সংগঠন।
বিশ্বাস ব্রিকস ইটভাটার ম্যানেজার মিলন হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, 'আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইট কাটা শুরু করে দিয়েছিলাম, কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মাঠে থাকা ইটের সব ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক টাকা লাগবে।’
মেহেরপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম আতু বলেন, ‘ছোট জেলা হলেও এখানে ১১৭টি ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে ৬০টিতে পানি জমেছিল। সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মতো লোকসান হবে।’