বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাশুল বাড়াচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৬:৪৯

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর সেবাদানকারী সংস্থা। ব্যবহারকারীদের সেবা দিয়ে যাবেন, লাভ-ক্ষতি নিয়ে চিন্তার তো দরকার নেই। ১৯৮৬ সালে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৩০ টাকা, এখন ৮৮ টাকা। আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত হয়েছে। সেই হিসাবে তো মাশুল আরও কমানোর কথা, সেখানে বাড়বে কেন?’

চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবার মাশুল বাড়াচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে মাশুল বাড়ানো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে সেবার নতুন হার নির্ধারণের দায়িত্ব। বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছেও মতামত চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির এই সময়ে মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নেতারা বলছেন, মাশুল বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। বন্দরের কাজ হলো সেবা দেয়া; ব্যবসা করা নয়।

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৮৬ সালের মাশুল আর কত দিন চলবে? বন্দরে সেবার বিনিময়ে কেবল খরচ আদায় করা হয়। বর্তমানে আদায় করা মাশুলের পরিমাণ খরচের চেয়ে অনেক কম। নতুন হিসাবে খরচ অনুযায়ী মাশুল আদায় হবে।

১৯৮৬ সালে নির্ধারিত হারে এত দিন মাশুল আদায় করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন যুগ পর ২০১৯ সালে মাশুল আদায়ের হার যুগোপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে তখন তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৫টি সেবার বিপরীতে বিভিন্ন উপখাতে ৩৩ থেকে ৪৮৮ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বাড়ানোর চিন্তা করছে বলে জানা গেছে।

তার মধ্যে রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ পোর্ট ডিউজ, পাইলটেজ ফি, বার্থিং-আনবার্থিং ফি, বার্থে অবস্থান, মুরিংয়ে অবস্থান, পানি সরবরাহ চার্জ, রিভার ডিউজ (প্রথাগত) ও ল্যান্ডিং অথবা শিপিং চার্জ (প্রথাগত), বন্দরের স্থান ব্যবহার ভাড়া (স্পেস রেন্ট), কনটেইনার বোঝাই ও খালাসকরণ, রেফার কনটেইনার সেবা, রিভার ডিউজ (কনটেইনারাইজড), লিফট অন/লিফট অফ চার্জ (চট্টগ্রাম বন্দর), লিফট অন/লিফট অফ চার্জ (ঢাকা আইসিডি) ও ঢাকার আইসিডিতে কনটেইনারের স্টোরেজ সেবা খাত।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খরচ অনুযায়ী (কস্ট বেইজড) ট্যারিফ নির্ধারণে বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে পরামর্শক টিম। স্পেনের মেসার্স আইডিওম কনসালটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস লজিকফ্রুম লিমিটেড সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজটি করছে।

এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের মতামত নেয়ার পর কাজ চলছে। চলতি মাসে প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়ার কথা রয়েছে। সেটি বন্দর কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলে আগামী বছরের মার্চে নতুন মাশুল চূড়ান্ত হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মানের একটি ট্যারিফ কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তবে মাশুল নির্ধারণ হবে আঞ্চলিক বন্দরগুলোর সঙ্গে তুলনা করে। আশপাশের বন্দরে মাশুল আদায়ের হার এরই মধ্যে পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি খাতের সেবায় খরচ অনুযায়ীই মাশুল আদায় করা হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবসা করবে না, তবে বন্দরের উন্নয়ন করতে হলে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হবে। সেবা দিয়েই সেই টাকা তুলে নিতে হবে। যৌক্তিক হারেই মাশুল বাড়ানো হবে।

তবে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর সেবাদানকারী সংস্থা। ব্যবহারকারীদের সেবা দিয়ে যাবেন, লাভ-ক্ষতি নিয়ে চিন্তার তো দরকার নেই। ১৯৮৬ সালে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৩০ টাকা, এখন ৮৮ টাকা। আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত হয়েছে। সেই হিসাবে তো মাশুল আরও কমানোর কথা, সেখানে বাড়বে কেন?’

মাশুল না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্সের সহসভাপতি মাহবুব চৌধুরী।

করোনা সংকটের এই সময়ে মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

আর ট্যারিফসংক্রান্ত মতামতের চিঠির উত্তরে মাশুল না বাড়িয়ে বন্দরের সেবাকে গতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘১৯৮৬ সালের ট্যারিফ দিয়ে আর কত চলবে। এ ছাড়া বন্দর লাভের জন্য ট্যারিফ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়নি। কেবল সেবা দিতে গিয়ে যে খরচ হবে, সেটি আদায় করবে। সে হিসাবেই (কস্ট বেইজড) ট্যারিফ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেবার বিপরীতে যে মাশুল আদায় করা হয় তা খরচের চেয়ে অনেক কম। এর পরও ট্যারিফ নির্ধারণের পর ব্যবসায়ীদের মতামত নেয়া হবে। তাদের পরামর্শ বিবেচনায় রেখে চূড়ান্ত হবে। ব্যবসার ক্ষতি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত বন্দর কর্তৃপক্ষ নেবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর